Skip to main content

ধনিয়া বা ধনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা কি

আমরা হয়তো এখনো জানিনা যে ধনিয়া বা ধনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা কি?ধনিয়া পাতা পছন্দ করে প্রায় মানুষই।অসাধারণ এই পাতা পুষ্টিগত গুনে ভরপুর এবং এটি একটি সুগন্ধি ঔষধি গাছ।সুস্বাদু এই পাতার বাংলাদেশি চাটনি ও মেক্সিকান সালসাতে ব্যবহার করা হয়।ধনে পাতা কে আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সালাত এবং তরকারির স্বাদ বাড়ানোর কাজে ব্যবহার করি।এ পাতা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো একটি খাবার।
রোজই একঘেয়ে রান্নায় একটুখানি ধনেপাতা।একটুখানি ধনেপাতার ব্যবহারে যেন বদলে দেয় এক নিমিষেই স্বাধ ও গন্ধ দুটোই।ধনেপাতার বৈজ্ঞানিক নাম হল করিএনড্রাম সেটিভা।আজকে আমরা জানবোধনিয়া বা ধনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা কি?ধনিয়া পাতায় কি কি ভিটামিন রয়েছে?সকালে ধনিয়া বেজানো পানি খেলে যেসব রোগ সারবে?ধনিয়া পাতা খাওয়ার নিয়ম।ধনিয়া পাতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আপনাকে ধনিয়া বা ধনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা কি রে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

উপসংহার

একাধিক রোগ ভালো করতে দারুন কাজে দেয় ধনিয়া বীজ।এই মসলাটি ছাড়া তরকারি রান্না করা যেন আত্মা ছাড়া শরীর।জ্বল হোক, কি জাল; সবকিছুতেই ধনিয়া বীজের বিতরণ।আর হবেই বা না কেন বলুন তো।স্বাদে,গন্ধে ভরপুর ধনিয়া পাতার তরকারি।ডাল বা তরকারিতে একটু ধনেপাতা দিলেই স্বাদ বহুগুনে যেন বেড়ে যায়।কিন্তু ধনে পাতার ঔষধি গুন থাকার পাশাপাশি কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে।খাবারের স্বাদ অনেকটা বাড়ালেও স্বাস্থ্যের জন্য অনেক সময় ভয়ানক ক্ষতিকারও হতে পারে।

ধনিয়া পাতায় কি কি ভিটামিন রয়েছে

অধিকাংশ মানুষই হয়তো জানে না ধনিয়া পাতার উপকারিতা।না জেনেই আমরা বিভিন্ন তরকারিতে ধনে পাতা ব্যবহার করে থাকি।ধনে পাতায় রয়েছে ১১ জাতের এসেসিয়াম অয়েল।ধনেপাতায় যে সকল ভিটামিন রয়েছে তা হল- ভিটামিন এ,সি,ভিটামিন কে,থায়ামিন,রিবোফ্লাবিন ইত্যাদি।মিনারেল রয়েছে ম্যাংগানিজ,ম্যাগনেসিয়াম,ফসফরাস,ক্লোরিন,আয়রন,জিংক,এবং ক্যালসিয়াম ইত্যাদি।এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পলিফেনল ও হাইটো কেমিক্যাল যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে শরীরের কাজ করে।ধনেপাতায় কোলেস্টেরল এর মাত্রা শূন্য।তাই ধনেপাতা কে সাধারণ কিছু ভাবার কোন কারণে নেই।

ধনিয়া পাতার ঔষধি গুন কি

বছরের সব সময় ধনিয়া পাতা পাওয়া যায় না।তবে শীতকালে এর স্বাদ বেশি।এর পাশাপাশি রয়েছে ধনিয়া পাতায় এক উচ্চ ঔষধি গুন।আমাদের সকলেরই উচিত ধনিয়া বা ধনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা কি? এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা।শীতকালে শীতের মৌসুমে বাজার দূরে থাকে শাকসবজির ছড়াছড়ি।তাই শীতকালে খাবারের স্বাদ আরো বাড়িয়ে দিতে ধনিয়া পাতার তুৃলনা হয় না।পাশাপাশি খাবার সুন্দরভাবে পরিবেশন করতেও ব্যবহার হয় ধনিয়া পাতার।তবে আপনি হয়তো জানেন না ধনিয়া পাতা শুধু খাবারের সৌন্দর্যই বাড়ায় না।এছাড়াও এতে রয়েছে নানা ধরনের স্বাস্থ্যকরী উপকারিতাও।চলুন এবার জেনে নেই ধনিয়াপাতার অসাধারণ সেই স্বাস্থ্যকরী উপকারিতা সম্পর্কে।
  • ধনেপাতা খেলে শরীর খারাপ হওয়ার কোলেস্টরলের মাত্রা কমে যায়,ফলে শরীরে ভালো কোলেস্টরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।কারণ ধনিয়া পাতায় কোলেস্টেরলের মাত্রা থাকে শূণ্য।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ধনেপাতা বিশেষ উপকারী।ধনিয়া পাতা খেলে রক্তের সুগারের মাত্রা কমে এবং ইনসুলিনের ভারসাম্য বজায় রাখে।
  • মুখের আলসার নিরাময়ে ধনিয়া পাতা এক বিশেষ উপকারী।কারণ ধনিয়া পাতায় রয়েছে এন্টি-সেপটিক।যা চোখের রোগের জন্যও ভালো উপকারী।
  • রক্ত সঞ্চালনের জন্য ঋতুস্রাবের সময় ধনিয়া পাতা খেলে উপকার পাওয়া যায়।ধনিয়া পাতায় থাকা আইরন রক্তশূন্যতা ছড়াতেও বেশ উপকার করে।
  • ধনিয়া পাতা খেলে ম্যাঙ্গানিজ পাকস্থলী ক্যান্সার প্রতিরোধ হয়।যেমন এতে রয়েছে অ্যাসকরবিক এসিড,বিটা ক্যারেটিন।
  • ধনিয়া পাতার রয়েছে এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যার হাতের বাথ এবং হার্ট ও জয়েন্টের ব্যথায় উপশমের কাজ করে।
  • ধনিয়া পাতা খেলে স্মৃতি শক্তির প্রখর এবং মস্তিষ্কের নার্ভ সচল রাখতে সাহায্য করে।
  • ভিটামিন কে এর অভাবে অ্যালজেইমার রোগ হয়।ভিটামিন কে এর কারনে যেসব রোগ হয়।ধনিয়া পাতা খেলে সে সকল রোগ উপশম হয়।
  • ত্বকের জ্বালাপোড়া কমাতে এবং ত্বক সুস্থ রাখতে ধনিয়া পাতার উপকারিতা অনেক।কারণ ধনিয়া পাতায় রয়েছে ডিসইনফেকট্যান্ট,ডিটক্সিফাইং,বিষাক্ত রোধকারী,অ্যান্টিসেপটিক,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল থাকার কারণে এরা বিভিন্ন ধরনের স্কিনকে ডিজঅর্ডার বা ত্বকের অসুস্থতা দূর করতে সাহায্য করে।ত্বককে রাখে সুস্থ সতেজ।
  • ধনিয়া পাতা খেলে এলার্জি বা এলার্জির কারণে ক্ষতিকারক প্রভাব গুলো দূর করে।কারণ ধনিয়া পাতায় রয়েছে এন্টিহিস্টামিন উপাদান।
  • খাবারের মাধ্যমে তৈরি হয় সবচেয়ে ভয়াবহ সৃষ্ট রোগ সালমোনেলা।ধনিয়া পাতায় উপস্থিত ডডেসিনাল প্রকৃতিক উপাদান থাকায় সালমোনিলা জনিত রোগ সরিয়ে তুলতে সাহায্য করে।ধনিয়া পাতা এন্টিবায়োটিক এর থেকে দ্বিগুণ কার্যকর।
  • ধনিয়া পাতায় থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল,এন্টিইনফেকসাস,ডিটক্সিফাইং,ভিটামিন সি এবং আয়রন গুটি বসন্ত প্রতিকার ও প্রতিরোধ করে।

সকালে ধনিয়া বেজানো পানি খেলে যেসব রোগ সারবে

প্রায় সবার রান্নাঘরেই ধনিয়া গুড়ো বা আস্ত ধনিয়া পাতা থাকে।এখন আমরা জানবো সকালে ধনিয়া বেজানো পানি খেলে যেসব রোগ সারবে সে সম্পর্কে।ধনিয়া পাতা রান্নার স্বাদ বাড়াতে ব্যবহার করে হয়।রান্নায় ব্যবহারের পাশাপাশি অনেকে মুখসুদ্ধি হিসেবেও আস্তা দুনিয়া পাতা খেয়ে থাকে।আর ধনিয়া পাতা ছাড়া যেন খাবারের স্বাদই পারে না।মসলা হিসেবে পরিচিত এই ধনিয়া পাতা যেন শুধু খাবারের শাড়ি বাড়ায় না বরং শরীরকে সুস্থও রাখে।সব ধরনের মসলা এই কিছু না কিছু পুষ্টিগত গুণ থাকে।তেমনি ধনিয়া পাতারও আছে পুষ্টিগত গুণ।এমনকি আয়ুর্বেদে ও এর কার্যকারিতা উল্লেখ আছে।ধনিয়া ভেজানো পানি খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।এই পানিতে থাকে এন্টি অক্সিডেন্ট।ফলে বিভিন্ন সংক্রমণের হাত থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়।

কিভাবে তৈরি করবেন ধনিয়া পানিও

প্রথমে ১০ গ্রাম ধনে বীজ ভালো করে থেঁতো করে নিতে হবে।২ লিটার পানির মধ্যে এই থেতো করা ধনে বীজ সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে।সকালে ভালো করে চামচ দিয়ে গুলিয়ে নিতে হবে এবং পরিষ্কার থাকলে দিয়ে পানি ছেকে নিতে হবে।সারাদিনে একটু একটু করে এই ধনিয়া পানি পান করুন।ধনিয়া পানিও খেলে হজম শক্তি বাড়ায়।এই উপাদানটি তে থাকে পুষ্টিগত গুণ।এ কারণেই পাচনতন্ত্র আরো ভালোভাবে কাজ করে।

ধনিয়া বা ধনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা কি

এখন আমরা জানবো ধনিয়া বা ধনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা কি? এ সম্পর্কে।চলুন আগে জেনে নেই ধনিয়া পাতার উপকারিতা সম্পর্কে।
ধনিয়া পাতার উপকারিতা কি
বাঙালির রান্না ঘরে ধনিয়া থাকেই।রান্নার স্বাদ ও গন্ধ বাড়াতে ধনিয়া পাতা ব্যবহার করা হয়।তবে শুধু কাজেই নয় ধনিয়া পাতা অনেক অসুখ দূর করতেও কাজ করে।বর্তমান সময়ে অল্প বয়সে অনেকেরই উচ্চ রক্তচাপ,ডায়াবেটিস,হাই কোলেস্টেরল হয়ে থাকে।এসব রোগগুলো থেকে দূরে থাকতে হলে খেতে হবে উপকারী খাবার।ধনিয়াও রাখতে পারেন সেই তালিকায়।চলুন এবার আমরা জেনে নেব ধনিয়া পাতার উপকারিতা সম্পর্কে।
  • রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে: শরীরের রক্তের শর্করা মাত্রায় বেশি থাকলে সেখানে দেখা দিতে পারে আরো অনেক রোগ।রক্তের শর্করা বেশি হলে কিডনি,স্নায়ু,চোখের সমস্যা তৈরি হতে পারে।তাই আমাদের শরীরের রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা অতি জরুরি।এক্ষেত্রে ধনিয়া রাখতে পারেন আপনার খাবারের তালিকায়।
  • ধনিয়া পাতায় থাকা বিভিন্ন উপকারী উপদান ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক কার্যকরী।তাই রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আপনার খাবারের তালিকায় রাখতে পারেন ধনিয়া পাতা।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে এবং রোগ জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করতে হলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী রাখা জরুরি।এতে নানা ধরনের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে পারবেন।ধনিয়া খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বেড়ে যায়।কারণ এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই এই মসলা প্রতিদিন খাওয়া উপকারী।
  • ধনিয়া হার্টের জন্য উপকারী বর্তমানে হার্টের রোগীর সংখ্যা বেড়েছে অসংখ্য।এই হার্টের রোগে সংক্রান্ত হয়ে অনেকেই প্রাণ হারচ্ছে।অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে উচ্চ রক্তচাপ ও ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে ধনিয়া।তাই ধনিয়া খেতে হবে নিয়মিত।এতে হাড়ের অসুখ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে খুব সহজেই।
  • ধনিয়া মস্তিষ্কের জন্য উপকারী মস্তিষ্কের নানা ধরনের সমস্যার উপকার করে ধনিয়া।বর্তমানে অনেক মানুষেরই এলঝাইমার্স বা পার্কিনসনস ডিজিজ দেখা দিচ্ছে।বয়স কিছুটা বাড়লেই এসব রোগে দেখা দেয়।এই রোগ গুলো আমাদের জীবন যাত্রার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।এ ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পেতে প্রতিনিয়ত খেতে হবে ধনিয়া।
  • ধরিয়া মস্তিষ্কের জন্য উপকারী:কারণ ধনিয়ায় রয়েছে এন্টিইনফ্লেমেটরি গুণ।
  • ধনিয়া পেটের জন্য ভালো: নিয়মিত ধনিয়া খাওয়া পেটের জন্য ভালো।ধনিয়ায় কোলোনেল স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়।যে কারণে গ্যাস ও এসিডিটির সমস্যা কমে যায়।এই মসলার বিভিন্ন গুন সংক্রমনের বিরুদ্ধেও লড়াই করে থাকে।ফলে সহজেই রোগ প্রতিরোধ করা হয়।শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত দুনিয়া খান।
  • ধনিয়া হজমে সহায়তা করে: হজমে সমস্যার কারণে যে সব সমস্যা হয়ে থাকে যেমন:পেট খোলা,গ্যাস্ট্রিক,ডায়রিয়া,বমি বমি ভাব দূর করতে ধনিয়া সহায়তা করে।ধনিয়ায় আছে খাদ্য আশ এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট।যা হজম সহায়ক হরমোন উৎপন্ন করতে এবং যকৃতের কার্যকারিতা অনেকটা বাড়ায়। ধনিয়ায় ডায়াবেটিস উপশম করে এই ক্ষুদ্র বৃষ্টির ওজন কমায় এবং অনাকাঙ্ক্ষিত চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
  • ধনিয়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিনের ভালো একটি উৎস।যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখতে সকালে ধনিয়ার পানি পান করুন।ধনিয়ার পানি ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • ধনিয়া চুল ও ত্বক সুস্থ রাখে দুনিয়ার ভিজে থাকে ভিটামিন ডি,সি,কে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।আরো রয়েছে বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদান।যা ত্বক ও চুলের জন্য খুবই উপকারী।প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় ধনিয়া যোগ করে ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনা যায়।কারণ এটা ত্বকের বলিরেখা পড়তে দূরত্ব রাখে।এবং স্কিনের অ্যালার্জি ও লালচে ভাব দূর করে।চুল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে পাশাপাশি অকালপক্কতা ধীর করে।
ধনিয়ার অপকারিতা কি
ধনিয়া বা ধনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা কি?এই প্রশ্নটার অর্ধাংশ সম্পর্কে জেনেছি।এখন আমরা জানবো ধনিয়া পাতার অপকারিতা সম্পর্কে।ধনিয়া খুবই উপকারি তবে,অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক না।চলুন এবার বিস্তারিত জেনে নেই ধনিয়া পাতার অপকারিতা সম্পর্কে।
  • অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে লিভারের কার্যক্ষমতাকে খারাপ করে ফেলে।এতে থাকে এক ধরনের উদ্ভিদ তেল যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করে ফেলে।
  • অতিরিক্ত ধনে খেলে নিম্ন রক্তচাপ সৃষ্টি হয়।অনেক সময় বিশেষজ্ঞরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই ধনেপাতা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে।স্বাভাবিকভাবে ধনে পাতা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল বিষয়ক সমস্যা দূর করে।কিন্তু বেশি পরিমাণে ধনেপাতা খেলে পাকস্থলীতে হজম ক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি করে।তবে ধনেপাতা অল্প খেলে পেটের সমস্যা দূর হয়।এটি বেশি খেলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • গর্ভধারণের সময় ধনেপাতা খাওয়া বাচ্চার শরীরের জন্য অনেকটা ক্ষতিকর।
  • লিভারের ক্ষতি করে অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে এটি লিভারের কার্যক্ষমতা খারাপ ভাবে প্রভাবিত করে।এটাতে এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে যা সাধারণত লিভারের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে।কিন্তু দেহের মধ্যে এর অতিরিক্ত মাত্রার উপস্থিতি থাকলে লিভারের ক্ষতি সাধন করে।
  • নিম্ন রক্তচাপ সৃষ্টি করে অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে হৃদপিণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়।এটি নিম্ন রক্তচাপ সৃষ্টি করে।উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ধনেপাতা খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকে।তবে অতিরিক্ত খেলে সেটা নিম্ন রক্তচাপ সৃষ্টি করে।এছাড়াও অতিরিক্ত ধানেপাতা খেলে মাথাব্যথাও হতে পারে।
  • পেট খারাপ হয় পরিমাণমতো ধনেপাতা খেলে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল বিষয়ক সমস্যা দূর করে।কিন্তু বেশি পরিমাণে ধনেপাতা খেলে পাকস্থলীর হজম ক্রিয়ার সমস্যা হয়।এ গবেষক বলেছেন,২০০ গ্রামের বেশি ধনেপাতা খেলে গ্যাসের ব্যথা,পেটের ব্যথা,পেট ফোলা,বমি হওয়া এবং ডায়রিয়া ও হতে পারে। শ্বাসকষ্ট বাড়ায় চিকিৎসকরা শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য ধনেপাতা খাওয়া নিষেধ করেন।কেননা এটি শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা করে।যার কারণে ফুসফুসে এজমা হতে পারে।শ্বাসকষ্টের রোগীরা ধনেপাতা খেলে ছোট ছোট নিঃশ্বাস নিতেও সমস্যা তৈরি করে।
  • বুকে ব্যথা অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে বুকে ব্যথা হতে পারে এবং বুকে ব্যথার মতো জটিল সমস্যায়ও দেখা দিতে পারে।এটি শুধুমাত্র অস্তিত্বকর ব্যাথাই তৈরি করে না তা দীর্ঘস্থায়ী করে।এইরকম সমস্যা থেকে রেহাই পেতে অল্প পরিমাণে ধনেপাতা খেতে পারেন।
  • ধনেপাতায় ত্বকের সংবেদনশীলতা ছোবল ধরনের ধনে পাতায় মোটামুটি কিছু ঔষধি এসিডিক উপাদান থাকে।যেটি ত্বককে সূর্য রশ্মি থেকে বাঁচিয়ে সংবেদনশীল করে।কিন্তু ধনেপাতা অতিরিক্ত সেবন করলে সূর্যের রশ্মি একেবারেই ত্বকের ভিতরে ঢুকতে পারে না।ফলে ত্বকে ভিটামিন কে থাকে না।এছাড়াও অতিরিক্ত ধনেপাতা সেবন করলে ত্বকে ক্যান্সারও তৈরি করে থাকে।
  • এলার্জির সমস্যা ধনেপাতায় শরীরে আইজিই নামক অ্যান্টিবডি তৈরি করে।কারণ ধনে পাতায় থাকে কঠিন উপাদান।যা,শরীরের বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান কে সমানভাবে বহন করে।কিন্তু এর অতিরিক্ত মাত্রা উপাদান গুলো বারসম্ম্য নষ্ট করে থাকে।ফলে শরীরে এলার্জি তৈরি হয়।এই এলার্জির ফলে এই শরীরে চুলকানি হয়ে থাকে এবং ফুলে যায়,জ্বালাপোড়া করে,র‌্যাশ বের হয় ইত্যাদি সমস্যা তৈরি করে।
আশা করি শুরু থেকে এই অংশ পর্যন্ত পড়ে আপনি জানতে পেরেছেন ধনিয়া বা ধনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা কি?এ সম্পর্কে।

ধনিয়া পাতা খাওয়ার নিয়ম

ধনিয়া পাতা বিভিন্ন রান্নার কাজে ব্যবহার করা যায়।রান্নার ব্যবহার করা ছাড়াও সুস্বাদু ধনেপাতার এসিও চাটনি ও মেক্সিকান বানাতে ব্যবহার করা হয়।ধনিয়া পাতা দিয়ে তৈরি করা হয় পাকোড়া।যা খেতে লাগে দারুন।ধনিয়া পাতা দিয়ে তৈরি করা হয় বিভিন্ন ধরনের ভর্তা যা খেতে জিবে জল আনি।ধনে পাতা দিয়ে বানানো হয়ে থাকে ধনে পাতার পরোটা।রেগুলার পরোটার স্বাদে এই পরোটার জুঢ়ি নেই।
উপকরণ:
দেড কাপ ময়দা,জিরে গুঁড়ো এক চা চামচ,এক মুঠো ধনেপাতা কুচি,দুই তিনটে কাঁচা মরিচ কুচিয়ে নিতে হবে।অল্প পরিমাণে আদা (১ ইঞ্চির মত)।লবণ ও গোলমরিচ গুঁড়ো দিতে হবে স্বাদমতো।হলুদের গুঁড়ো এক চা চামচ।তেল বা ঘি দিতে হবে পরিমাণ মতো।
প্রস্তুত প্রণালী:
সব উপকরণগুলো বড় একটি বাটিতে নিতে হবে।তারপর ভালো করে পানি দিয়ে মেখে নিতে হবে।ময়দা মাখা নরম করতে এক চামচ তেল দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ডেকে রেখে দিন।১০ মিনিটের মতো।ময়দার মাখাগুলো থেকে ১০-১২টা লেচি কেটে নিন।তাওয়া গরম করে ভালো করে ছেঁকে নিতে হবে।দু'পীঠ থাকা হয়ে যাওয়ার পর তাওয়াই গিয়ে ছড়িয়ে ভালো করে দু পিঠ বেজে নিতে হবে।ব্যাস এবার তৈরি হয়ে গেলো ধনিয়া পাতার পরোটা।
ধনিয়া পাতা দিয়ে রূপচর্চা
ধনেপাতা রান্নায় হাত বাড়ানোর পাশাপাশি রূপচর্চায়ও দারুন কাজে দেয়।প্রকৃতভাবে ব্রিজ তৈরি করতে ধনিয়া পাতার কার্যকারিতা দারুন।ধনিয়া পাতা ঠোঁটের কালো দাগ দূর করে।যাদের ঠোঁটের কালো দাগ আছে তারা রাতে ঘুমানোর সময় ধনেপাতার রসের সাথে দুধের সর মিলিয়ে ঠোঁটে লাগান।এটি রোজ রাতে ঘুমানোর আগে লাগাতে হবে।এভাবে এক মাস লাগালে ঠোঁটের কালো দাগ দূর হবে এবং ঠোঁট হবে কোমল।

ধনে পাতার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে নিন

এন্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন এ,ভিটামিন সি,ফসফরাস থাকার কারণে এই পাতা দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে এবং চোখের উপহার স্ট্রেস পড়তে দেয় না।এবার চলুন আলোচনা করা যাক ধনেপাতার পুষ্টিগত গুন সম্পর্কে।আমাদের শরীরের ক্ষতিকারক ক্লোরেস্টেরলের মাত্রা কমায়। হজমশক্তি বাড়াতে এবং লিভারকে আরো বেশি সক্রিয় করে থাকে। ব্লাড সুগার রোগীদের সুগার লেভেল কন্ট্রোলে রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন কে জনিত রোগীদের রোগের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে।

ধনেপাতায় Anti-Inflammatory গুণ পাওয়া যায়।যা আর্থারাইটিস রোগের জন্য উপকারী। মুখের আলসার দূর করতে পারে এই ধনেপাতা।এর মধ্যে থাকে এন্টি সেপ্টিকের গুল। আমাদের শরীরের স্নায়ু সচল রাখতে ধনিয়া পাতার উপকারিতা অসামান্য। ধনেপাতা খেলে পেটের রোগ এবং বমি বমি ভাব রোধ করে। মুখের দুর্গন্ধ দূর করে এই ধনেপাতা। প্ররচু ক্যালসিয়াম এবং মিনারেল পাওয়া যায়। যা আমাদের শরীরের হাড় ভালো রাখে।

যেভাবে চাষ করবেন ধনিয়া

আমাদের দৈনন্দিন খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে তোলে ধনিয়া।ধনিয়া বা ধনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা কি?সে সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি।তবে ভালো মানের ধনিয়া পেতে হলে আগে অবশ্যই আপনাকে যেভাবে চাষ করবেন ধনিয়া সে সম্পর্কে জানতে হবে।সব ধরনের তরকারিতে ব্যবহার করা যায় ধনিয়া।কাঁচাধনিয়া সালাতের সঙ্গে খাওয়া যায়।ধনিয়ার বীজ ও বিভিন্ন মুখস্ত খাবারের সঙ্গে যুক্ত করে খাওয়া যায়।তাই আজকেই জেনে নিন ধনিয়া কিভাবে কাজ করা হয়ে থাকে-

ধনিয়া পাতা চাষ এর পদ্ধতি
ধনিয়া চাষের জন্য উপযুক্ত মাটি প্রয়োজন হলেও প্রায় সব ধরনের মাটিতেই দুনিয়া চাষ করা যায়।এছাড়াও টবে বা ছাদে ধনিয়া চাষ করা যায়।তবে মাটির পরিসীমা ৮-১০ হওয়া উচিত।ধনিয়া চাষের জন্য পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকা দরকার।জমি ভালোভাবে প্রস্তুত করার জন্য মাটি ভেদে ৪-৬ বার চাষ ও করা উচিত।শেষবার চাষের আগে জমিতে গোবর ও সার নিয়ম মত প্রয়োগ করতে হবে।ধনিয়া পাতা সারা বছর পাশ করা যায়।কিন্তু বীজের ক্ষেত্রে শুষ্ক ও ঠান্ডা আবহাওয়া ভালো।এজন্য বীজের ক্ষেত্রে শীতকাল বা রবি মৌসুমে পাশ করা উত্তম।ধনিয়া বীজের ক্ষেত্রে গাছে ফুল আসার পরে মেঘলা আকাশ,বৃষ্টিপাত এবং কুয়াশা হলে রোগ পোকার আক্রমণ হয়।যা বীজ সংগ্রহের ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।
ধনিয়া পাতা চাষ করার জন্য সেপ্টেম্বর- মার্চ মাস এবং ভিজিট ক্ষেত্রে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত বপন করা হয়ে থাকে।
মাটি প্রয়োগ
সব ধরনের মাটিতেই দুনিয়া চাষ করা যায়।ধনিয়া চাষের জন্য বেলে দো-আঁশ থেকে এটেল দো-আঁশ মাটি উপযোগি।ধনিয়া চাষের জন্য পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। মাটির প্রকারভেদে ৪-৬ টি মই দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে।
ধনিয়া বীজ বপন
মধ্য-ভাদ্র থেকে মধ্য- আশ্বিন মাসে দুনিয়ার বীজ বপন করতে হয়।বীজ বপন করার আগে ধনিয়া 24 ঘন্টা পানির মধ্যে ভিজিয়ে রাখতে হবে।মিশ্র ফসল হিসেবে সার পদ্ধতিতে বপনের জন্য ৪-৫ কেজি প্রয়োজন হয়।
সার প্রয়োগ
  • ধনিয়া চাষের জন্য গোবর ৮-১০ টোন।
  • ইউরিয়া ২৮০- ৩১০ কেজি
  • টিএসপি ১৩০ কেজি
  • এমপি ১০০ কেজি
  • জিপসাম ৭০ কেজি
  • জিংক সালফেট ১৩ - ১৫ কেজি
জমি তৈরির সময় অর্ধেক গোবর, সব টি এস পি ও অর্ধেক এমপি সার দিতে হবে।বাকি অর্ধেক গোবর চারা রোপনের এক সপ্তাহ আগে মাদায় দিয়ে মিশিয়ে রাখতে হবে।এরপর চারা রোপন করে জমিতে সেচ দিতে হবে।ইউরিয়া এবং বাকি অর্ধেক এমপি সার দুই বারে দিতে হবে।চারা লাগানোর ৮-১০ দিন পর ১ম বার,এবং চারা লাগানোর৩০-৪৫ দিন পর বাকি সার প্রয়োগ করতে হবে।
পরিচর্যা ও সেচ
চারা গজানোর ১০-২০ দিন পর সারিতে ৫ সেন্টিমিটার পর পর একটি চারা রেখে বাকিগুলো তুলে ফেলতে হবে।নিরিয়ানি দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হবে এবং মাটি ঝুরঝুরে করে দিতে হবে।প্রতিবার শেষ দেওয়ার পর মাটি জড়ো হয়ে গেলে তা ভেঙ্গে দিতে হবে।অবশ্যই দুনিয়ার জমিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা দরকার।

লেখক এর শেষ কথা

GAZI MAX IT এর পক্ষ থেকে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে ধনিয়া বা ধনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা কি?এ সম্পর্কে আপনি জানতে পেরেছেন।ধনিয়া পাতা চাষে গাছের অনেক যত্ন নিতে হয়।ধনিয়া পাতা গাছের সাথে অনেক আগাছা ও পরগাছা জন্ম নেয়।সেগুলো নিড়ানি দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার করে দিতে হবে এবং মাটি ঝরঝরে রাখতে হবে।

ধনিয়া বা ধনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা কি?এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।ধনিয়া বা ধনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা কি?এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধবীদের মাঝে আর্টিকেলটি শেয়ার করে দিতে পারেন।(ধন্যবাদ)

Comments

Popular posts from this blog

সুন্দরবন হোটেল বা রিসোর্ট বুকিং করার নিয়ম সম্পর্কে জানুন -২০২৪

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের অনলাইনে টিকিট কাটা - ভ্রমণ করার সকল নিয়ম

মুক্তা চাষ কিভাবে করবেন এবং মুক্তা চাষের জন্য কোথা থেকে প্রশিক্ষণ নিবেন