আপনারা হয়তো অনেকেই ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পাওয়ার কারণ সম্পর্কে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন।কিন্তু কোন ভাল ফলাফল পাননি।তবে এতে চিন্তার কোন কারণ নেই।আজকে আমার এই আর্টিকেলটিতে ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়?ও ডিপ্রেশন হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ১৪টি কারণ সম্পর্কে জানতে পারবেন।বিশ্বজুড়ে এক ভয়াবহ বেধির নাম হলো ডিপ্রেশন।বিশ্ব সংস্থাদের মতে,বিশ্বে প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন লোক ডিপ্রেশন নামক ব্যাধিতে ভুগছে।যা আমাদেরকে অক্ষমতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।বাংলাদেশের ও দিনদিন বেড়ে যাচ্ছে এই বিষন্নতা রোগীর সংখ্যা।যদিও এই বিষন্নতা রোগটি অনেকের মধ্যে আছে।কিন্তু তা আমরা বুঝেও স্বীকার করতে চাই না।
ডিপ্রেশন যে কি এক মহা ব্যাধি তা একমাত্র সেই বুঝবে।যার এই ডিপ্রেশন নামক ব্যাধিটি হয়েছে।আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা ধরনের ঘটনার জন্য মন খারাপ হয়।ছেলে বা মেয়ে অসুস্থ থাকার কারণে কিংবা ব্যবসা-বাণিজ্য আরো নানান ধরনের সমস্যার কারণে আমাদের মানসিক সমস্যা হয়ে থাকে।আজকে আমরা আলোচনা করবো ডিপ্রেশন হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ১৪টি কারণ সম্পর্কে।ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়? ডিপ্রেশন হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ১৪টি কারণ সম্পর্কে জানতে হলে এই আর্টিকেলটি আপনাকে সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ
.
ভূমিকা
ডিপ্রেশন হওয়ার কারণে একটুখানি ক্লান্ত লাগা,মনের মধ্যে শান্তি না থাকা, হঠাৎ করে মন খারাপ হয়ে যাওয়া।এ যেন আমাদের জীবনের এক অংশ।চারপাশে যতই আনন্দ থাক না কেন,এ যেন আমাদেরকে আনন্দ দিতে পারে না।যখন এই আশেপাশের আনন্দ আমাদেরকে আনন্দ দিতে পারে না।তখন মনের মধ্যে হতাশা কাজ করতে শুরু করে।আর এই আনন্দ না থাকার পিছনে কারণ তো অবশ্যই আছে।তা হতে পারে কারো প্রিয় মানুষ চলে যাওয়া বা কারো স্বপ্ন ভেঙে যাওয়া ইত্যাদি এরকম আরো বিভিন্ন রকমের কারণ থাকতে পারি।ডিপ্রেশনে হওয়ার কারণে মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়।তাই আমাদেরকে এমন কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত।যাতে আমরা ডিপ্রেশন কাটে থাকতে পারি।
ডিপ্রেশন কেন হয়,ডিপ্রেশনের লক্ষণ গুলো কি
ডিপ্রেশন হওয়ার নির্দিষ্ট কারণ নেই।ডিপ্রেশন হতে পারে বিভিন্ন কারণ।এটা বিভিন্ন মানুষের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন রকমের হতে পারে।আসুন এবার ডিপ্রেশন হওয়ার কিছু লক্ষণ সম্পর্কে জেনে নেই।
- কোন কিছু করার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলা: যদি কোন কাজের প্রতি আগ্রহ কমে যেতে শুরু করে।তাহলে বুঝতে হবে আপনি বিষণ্ণতায় ভুগছেন।
- নিজের অনুভূতি লুকিয়ে রাখা: যারা বিষন্নতায় ভুগে তারা নিজের প্রিয় মানুষ বা আপনজনার সাথেও নিজের সমস্যার কথা বলতে চায়।তারা ভাবে মনের কথাগুলো নিজের মধ্যে লুকিয়ে রাখাই ভালো।নিজের সমস্যাগুলো অন্যের কাছে বলতে ভালো লাগে না।তারা মনে করে নিজের কথাগুলো অন্যদের কাছে বলা ঠিক না।তাই তারা নিজেদের কথাগুলো অন্যের কাছে প্রকাশ করে না।
- ক্ষুদার ধরন পরিবর্তন হওয়া: খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন হওয়াও ডিপ্রেশনের অন্যতম একটি কারণ।এ সময়ে ডিপ্রেশনে ভুগন্ত রুগী স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি খাবার খায়।নয়তো আগের তুলনায় খাওয়ার পরিমাণ একদম কমিয়ে দেয়।
- কোন অনুভূতিই না থাকা: ডিপ্রেশনে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে কোন অনুভূতি থাকে না।এমনকি তারা বলতেও পারে না,তারা ভালো আছে নাকি খারাপ আছে।এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তারা দিদা গ্রস্ত হয়।আর নয়তো একটা মেকি উত্তর দিয়ে দেয়।উত্তরটা এরকম হয় যে, আমি তো সবসময়ই ভালো থাকি অথবা ভালোই আছি।আসলে তারা কেমন আছে সেটাই তারা সঠিকভাবে জানে না।
- নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি: নিজের ভাবনার জগতে নিজেকে হারিয়ে ফেলা।অবিন্যস্ত কথোপকথন,কথায় যুক্তি কিংবা আবেগ দুটোর একটাও না থাকা।কোন ধরনের কথা খুঁজে না পাওয়া ইত্যাদি।তাদের ভাবনার গতি যখন কমে যায় তখন তাদের কথা বলাও বয়স্কতা হয়ে যায়।ডিপ্রেশনে আক্রান্ত রোগীরা নিজেদের চিন্তাভাবনা নিয়ে খুব হতাশ থাকে।নিজের মধ্যে ঘটে যাওয়া সমস্ত ভুলগুলো নিজের উপরেই দোষ চাপিয়ে দেয়।
- নিজের ইচ্ছায় প্রচন্ড ব্যস্ত জীবন বেছে নিয়া: ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হয়েছে কিনা তা বুঝার জন্য একটি উপায় হল ডিপ্রেশনে আক্রান্ত রোগী সবসময় নিজেকে ব্যস্ত রাখতে চায়।যাতে তার মনের মধ্যে কোন কষ্টদায়ক ভাবনা বা অনুভূতি না আসতে পারে।
- হঠাৎ করে রেগে যাওয়া: অন্য কারো হাসি বা আনন্দ দেখলে ডিপ্রেশনে আক্রান্ত রোগী অল্পতেই বিরক্তবোধ হয় ও রেখে যায়।
- ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ করা: বিষন্নতা ব্যক্তিদের মধ্যে ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা খুবই বেড়ে যায়।বিশেষ করে পুরুষের মধ্যে এটা বেশি হয়।যেমন- জোরে গাড়ি চালানো,রাস্তাঘাটে চলাচলের সময় অন্যমনস্ক হয়ে থাকা,নিজের প্রতি সহানুভূতি না হওয়া ইত্যাদি।
- চিনতে ভাবনা অস্পষ্ট থাকা: বিষন্নতায় আক্রান্ত রোগীরা সবসময় নিজের সমস্যা টিপে রাখতে রাখতে একসময় তাদের কিছু চিন্তা করার অনুভুতিও থাকে না।তারাবাবিন নষ্ট কথাবার্তা বলে।কথার মধ্যে যুক্তি আবেগ কোনোটাই থাকে না।
- একাকীত্ব হয়ে পড়া: ডিপ্রেশনে আক্রান্ত রোগী একা চলতে চলতে একসময় মানুষের সংঘ হারিয়ে ফেলি এবং নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ে।এর ফলে অন্যের ভালো কিংবা মন্দলাগা ও অন্যের অনুভূতির প্রতিও তার কোন প্রভাব ফেলে না।সবার প্রতি তার বিরক্ত বোধ লাগে।নিজে নিজেই উদাসীন হয়ে পড়ে।এক সময় তার ভুলগুলো সে নিজেই বুঝতে পারে।কিন্তু সে আর আগের স্থানে ফিরতে পারে না।
আরো পড়ুনঃ ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে ১০টি প্রশ্নের উত্তর
ডিপ্রেশন হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ১৪টি কারণ সম্পর্কে জেনে নিন
বিশেষ করে এ রোগের কিছু কমন কারণ থাকে।যেমন-
- অপমানবোধক কারণ: মানসিক বা শারীরিকভাবে অপমান হওয়ার কারণে ও ডিপ্রেশন হয়ে থাকে।সেটা হতে পারে তার আপনজন থেকে কিংবা পাড়া-প্রতিবেশী।
- একাকীত্ব থাকার কারণে: সামাজিক বা পারিবারিক নিরাপত্তা না থাকার কারণেও অনেকের বিষন্নতায় ভুগতে হয়।তাছাড়াও মা-বাবা,ভাই-বোন,আত্মীয়-স্বজন কিংবা প্রিয় মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নতা থাকার কারণেও ডিপ্রেশনে ভুগতে হয়।
- মৃত্যুশোকে শোকাহতর কারণে: কাছের মানুষ কিংবা প্রিয় মানুষগুলো মারা যাওয়ার পরে অনেকেই তা মেনে নিতে পারে না।মৃত্যুর শোক কাটিয়ে না ওঠার কারণে নিজের মধ্যে ডিপ্রেশন চলে আসে এবং বিষন্নতা সৃষ্টি হয়।
- বংশগত প্রভাব ফেলার কারণে: পরিবারের কোন সদস্য ডিপ্রেশনে থাকার কারণে ও তা অন্য কারোর উপর প্রভাব ফেলে ।
- জীবন পরিবর্তনের কারণে: আমাদের জীবনে বড় ধরনের পরিবর্তন হওয়ার কারণে ও ডিপ্রেশনে ভুগতে হয়।যেমন- চাকরি হারিয়ে গেলে, চাকরি থেকে অবসর পেলে,কামায় রোজগার না থাকলে, আয় কম হলে,জায়গা পরিবর্তন করলে,বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেলে,কারো কারো ক্ষেত্রে নতুন বিয়ে করলেও ডিপ্রেশনের শিকার হয়।
- বড় ধরনের কোন রোগ হলে: মানুষের বড় ধরনের কোন রোগ হলে সে ক্ষেত্রেও রোগীর কারণে চিন্তিত হয়ে ডিপ্রেশনে ভুগতে হয়।কিছু ভয়াবহ রোগ আছে যার নাম শুনলে মানুষ এমনিতেই চমকে যায়।যেমন- কিডনিতে সমস্যা,ক্যান্সার,লিভারের সমস্যা ইত্যাদি।
- ঔষধের প্রভাব এর কারণে: কিছু কিছু ঔষধ আছে, যা সেবন করার ফলে মানুষকে বিষন্নতায় ভুগতে হয়।যেমন- বরণের চিকিৎসার জন্য আইসোট্রেটিনিয়ন বা অ্যান্টিভাইরাস ‘ইন্টারফেরন আলফা’ এই জাতীয় ঔষধে ও অনেকের বিষন্নতায় কাজ করে।
এছাড়াও কিছু ব্যক্তিগত কারণেও মানুষের ডিপ্রেশন আসে এবং বিষন্নতার কাজ করে।এগুলোও ডিপ্রেশন হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ।কিভাবে বুঝবেন আপনি ব্যক্তিগতভাবে বিষন্নতার ভুগছেন।জেনে নিন ব্যক্তিগতভাবে বিষন্নতায় ভোগার কারণগুলো
আরো পড়ুনঃ সর্দি কাশি ফ্লু হলে বা ঠান্ডা লাগলে করনীয়
- কাজের প্রতি অনীহা থাকার কারণে: এক সময় আপনার যে কাজগুলো শখের ছিল।সেই কাজগুলো করতে এখন আর ভালো লাগে না।কোন কাজেই যেন আপনি উৎসাহ পাচ্ছেন না।সারাদিন শুয়ে বসে থাকতেই ভালো লাগে।সহজ কাজগুলো যেন নিজের কাছে কঠিন বলে মনে হয়।এক সময় যে কাজগুলো করতে খুব আনন্দ লাগতো।ডিপ্রেশনে যাওয়ার পর যেন সেই কাজগুলো করতেও ভালো লাগেনা।দরকারে কাজগুলো করতেও যেন বিরক্ত লাগে এবং জোরজবস্তি ভাবে কাজ করতে হয়।
- খাদ্যেভ্যাসে পরিবর্তন: ডিপ্রেশন হওয়ার কারণে রেগুলার খাদ্যভ্যাসে পরিবর্তন হতে পারে।আগে যে স্বাভাবিক ভাবে খাবার খেতেন, তার তুলনায় হয়তো খাওয়ার রুচি অনেক বেড়ে যাবে।নয়তো স্বাভাবিকের তুলনায় খাবারের রুচি একদমই কমে যাবে।আর এই খাবার রুচি কম বা বেশি হওয়ার কারণে আপনার শরীরের ওজন ও কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া শুরু করবে।যা আপনার শরীরের বিভিন্ন জটিলতা কি করবে।
- অনেক দিনের অনিদ্রা: দীর্ঘদিনের অনেকরা বিষন্নতার একটি লক্ষণ।যারা বিষন্নতায়ভুগছেন। তাদের বেশিরভাগ মানুষেরই অনিদ্রার সমস্যা রয়েছে।অনিদ্রে থাকার বিভিন্ন কারণ হতে পারে।নিজের শারীরিক ও মানসিক সমস্যার কারণেও অনিদ্রা হয়।অন্যের অসুস্থতা দেখাশোনা করার কারণেও অনিদ্রা হতে পারে।
- নিজেকে নিজের মধ্যে গুটিয়ে ফেলা: ডিপ্রেশন এর কারনে নিজেকে নিজের মধ্যে গুটিয়ে ফেলাও ডিপ্রেশন হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ একটি কারন।পরিবার,বন্ধুবান্ধব,আত্মীয়-স্বজন কারো কথায় যেন নিজের কাছে ভালো লাগে না। ক সময় সামাজিকতাও যেন নিজের মধ্যে ভালো লাগে না।মনে হবে যেন নিজেকে একাকীত্ব ঘিরে ফেলেছে।যা আপনাকে বিষন্নতা আরো অসুস্থ বানিয়ে ফেলবে।
- সবকিছুতেই মনোযোগ না থাকা: বিষন্নতার কারণে মাথার মধ্যে যেন একটি ঘোর নিয়েই থাকতে হয়।যার কারনে কোন কিছুতেই ঠিকভাবে মনোযোগ দেয়া যায় না।অন্যদের কথাও মনোযোগ দিয়ে শোনা যায় না এবং যেকোনো আলোচনা শুনলেও মনে রাখা যায় না।
- সবকিছুতেই নেতিবাচক মনোভাব: দুঃখবোধ,আশাহীনতা ও হতাশা থাকার কারণে সবকিছুতেই নেতিবাচক মনোভাব দেখা দেয়।
- মাথাব্যথা ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা: নিয়মিত মাথা ব্যথা ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকার কারণে ও ডিপ্রেশনে চলে যেতে হয় এবং বিষন্নতার সৃষ্টি হয়।
শিশুদের বিষন্নতা দেখা দিলে কিভাবে বুঝবো
একেক শিশুর ক্ষেত্রে একেক ভাবে বিষন্নতা দেখা দেয়।শিশুদের ডিপ্রেশন হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ কারণ সম্পর্কে জেনে নিন।
- বিশ্রামে থাকলেও শরীরে ক্লান্তি বা কম শক্তিবোধ করা
- অস্থিরতা ও মনোযোগ না থাকা
- দৈনন্দিন কাজগুলো মত না করা
- লেখাপড়ায় অমনোযোগী হওয়া
- খুদা ও ঘুমানোর নিয়ম আগের মত স্বাভাবিক না থাকা
- কোন কারণ ছাড়াই যন্ত্রনা বা ব্যথা থাকা
কিছু আবেগী ও মানসিক লক্ষণ--
- অবিরাম দুঃখ বা বিরক্তি বোধ করা
- বন্ধুবান্ধব বা গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো থেকে আগ্রহ হারানো
- অন্যদের কাছ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে একাকীত্ব থাকার চেষ্টা করা
- নিজেকে গুরুত্বহীন বাবা ও অপরাধজনক কাজ করা
- এমন কিছু কঠিন কাজের ঝুঁকি নেওয়া, যা সাধারণ কেউ করে না
- নিজের ক্ষতি নিজেই করার চেষ্টা ও আত্মহত্যা করার চেষ্টা
আপনার সন্তানকে মানিয়ে নিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে জেনে নিন
আপনি যদি বুঝতে পারেন আপনার সন্তান হতাশায় ভুগছে।তাহলে আপনি আমার দেয়া তথ্যগুলো কাজে লাগাতে পারেন।
- তার সমস্যা সম্পর্কে জানুন: তাকে জিজ্ঞাসা করুন সে কেমন অনুভব করছে।তার কথাগুলো মনোযোগ সহকারে শুনুন।তার কথা গুলোর মধ্যে কোন প্রকার মন্তব্য করা যাবে না।যারা কিনা আপনার সন্তানকে চিনে এমন কিছু মানুষের কাছে আপনার সন্তান সম্পর্কে জেনে নিন।তাছাড়াও আপনার সন্তানের কি হয়েছে সে সম্পর্কে জানতে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে বা প্রিয় শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।নতুন স্কুলে ভর্তি হওয়া বা বয়সন্ধিকাল এর মত জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সময় আপনার সন্তানের সুস্থতার দিকে খেয়াল রাখুন।
- আপনার সন্তানের সাথে সময় কাটান: সময় কাটানোর জন্য আপনার সন্তানকে নিয়ে বাহিরে ঘুরতে পারেন।তার প্রিয় খাবার বা প্রিয় জিনিস গুলা কিনে দিতে পারেন।তার সাথে এমন ভাবে থাকতে হবে যাতে সে বিনোদনে থাকে।তার দৈনন্দিন কার্যকলাপের প্রতি আগ্রহ থাকুন।অবসর সময়ে থাকি কাছে নিয়ে জিজ্ঞেস করুন তার স্কুল ক্লাসটি কেমন চলল, বন্ধুদের সাথে কেমন সময় কাটলো,তার সবচেয়ে পছন্দের দিন কোনটি এবং সে কি করতে ভালোবাসে।
- ইতিবাচক উৎসাহ দিন: আপনার সন্তানকে এমন কিছু কাজ করতে উৎসাহ দিন যাতে সে উপভোগ করতে পারে।নিয়মিত খাওয়া ও ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন।তাদের শরীর ভালো রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল তাদের মন ভালো রাখা।তাদের সাথে মেজাজ দেখানো যাবেনা।
- বাচ্চাদেরকে নিজের সম্পর্কে প্রকাশ করতে দিন: বাচ্চাদেরকে আপনার সাথে তাদের স্বাধীন মত কথা বলতে দিন।তারা কেমন অনুভব করতে তা বলতে দিন এবং মনোযোগ সহকারে শোনার চেষ্টা করুন।তাদের ভাবনাগুলো শোনার জন্য কখনোই চাপ দেয়া যাবে না।এর পরিবর্তে আপনি অন্যান্যশীলতা সৃষ্টি করতে পারেন। যেমন- ছবি আঁকা,কারুকলা বা তাদের চিন্তাভাবনা সম্পর্কে লেখালেখি করতে বলতে পারেন।
- মানসিক চাপপূর্ণ পরিবেশে না রাখা: আপনার সন্তানকে এমন কোন পরিবেশে রাখবেন না,যেখানে তাকে মানসিক চাপে থাকতে হয়।
ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়গুলো জেনে নিন
- বাস্তববাদী লক্ষ্য ঠিক রাখতে হবে: ডিপ্রেশন থেকে নিজেকে দূরে রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখা।এজন্য হালকা ধরনের ছোটখাট কাজ করতে হবে।নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখলে চিন্তা ভাবনা মাথায় আসে না এবং ডিপ্রেশন আসার কোন সুযোগ থাকে না।
- আপনজন বা বন্ধু-বান্ধবের সাথে সময় কাটানো: ডিপ্রেশন কাটাতে একা থাকার চেয়ে বন্ধু বান্ধবের মাঝে সময় কাটানো ভালো।আমাদের এমন বন্ধু-বান্ধব বা আপনজন আছে যাদের মাঝে কখনো মন খারাপ করে থাকা যায় না।যাদের মাঝে গেলেই হাসি ঠাট্টার মধ্যে থাকতে হয়।এমন বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে সময় কাটা যেখানে থাকলে আপনার মন-মানসিকতা ভালো থাকে।যদি তাদেরকে ভালো লাগে তাহলে আপনার বিষন্নতা নিয়েও তাদের মাঝে কথা বলতে পারি।আপনজন বা প্রিয় মানুষগুলোর সাথে গল্প গুজবে সময় কাটিয়েও মন ভালো করতে পারেন।
- শরীরচর্চামূলক কাজ করা: আমরা সকলেই জানি আমাদের শরীরের সাথে মনের সম্পর্কযুক্ত।তাই আমাদের মনকে ভালো রাখার জন্য অবশ্যই শরীর ভালো রাখতে হবে।আর শরীর ভালো রাখার জন্য ব্যায়াম জাতীয় কোন কাজ করতে পারেন।এছাড়াও ব্যায়ামের পাশাপাশি উপযুক্ত খাদ্য খেতে হবে।শারীরিকভাবে কিছু নিঃসৃত হরমোন রয়েছে।যেগুলো আমাদের মনকে ভালো রাখে।এই হরমোনটাকে বলা হয় ‘এন্ড্রোফিন’।নিয়মিত ব্যায়াম করলে এই হরমোনটি নিঃসরণে সাহায্য করে।আমরা বিষন্নতা দূর করতে নিয়মিত যেগুলো ব্যায়াম করতে পারি।যেমন সাইকেল চালানো,সাঁতার কাটা,একটু হাঁটাহাঁটি করা,ব্যায়াম করা ইত্যাদি।এতে আমাদের শরীর স্বাস্থ্য ও মন দুটি ভালো থাকবে।
- স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া: একটি সুস্বাস্থ্যকর তালিকায় পাড়ে নিজেকে সুস্থ রাখতে এবং বিষন্নতা দূর করতে।সুস্বাস্থ্যকর খাবার ডায়েট করতে সহায়তা করে।কিছু কিছু খাবার আসে যা বিষন্নতা বাড়াতে সাহায্য করে।এজন্য ভীষণতা দূর করতে আমাদের দৈনন্দিন খাবারের দিকে নজর দেয়া উচিত। ভিটামিন বি,টামিন সি ও ভিটামিন টি এবং আয়রনযুক্ত খাবার খেলে মন ও শরীর ভালো থাকে।এজন্য আমরা দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় সবজি,ফলমুন বা ফলের রস রাখতে পারি।সেই সাথে পরিমিত পরিমাণ পানীয় খেতে হবে।তবে মদ জাতীয় পানীয় থেকে দূরে থাকতে হবে।
- নিজের পছন্দের কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখা: বিষন্নতায় দেখা দিলে আমাদের অপছন্দের কাজগুলো করতে ইচ্ছে হয় না।অনিশ্চিত কাজগুলোতে মন বসতে চায় না।বিষণ্নতার মাঝে আমাদের এমন কাজগুলো করা উচিত যে কাজগুলো আমাদেরকে আনন্দ দেয় এবং কঠিন কাজ হলেও তা করতে ইচ্ছে হয় বা ভালো লাগে।পুরনো সেই সব কাজ করতে পারি যা আমাদের ভালো লাগতো।যেমন- ঘুরতে যাওয়া,আড্ডা দেয়া,গান শোনা,রান্নাকরা।এই কাজগুলো বিষন্নতা দূর করতে সাহায্য করে।
- প্রকৃতির মধ্যে থাকা: বর্তমানে সমাজের ডিপ্রেশন দূর করতে সবচেয়ে যেই কাজটি বেশি করে থাকে তা হল প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করা।সেই আদিকাল থেকেই মানুষের মনে ও প্রকৃতির সাথে সম্পর্ক।প্রকৃতির একটুখানি আবহাওয়া যেভাবে মানুষের মনে ধোলা দেয়।সেভাবেই মানুষের বিষণ্ণতা কাটাতেও সাহায্য করে।সব মানুষই চায় কিছু সময়ের জন্য প্রকৃতির মাঝে গিয়ে সবকিছু ভুলে যেতে।এভাবে প্রকৃতির মাঝে ঘুরতে যাওয়া বিষন্নতা দূর করতে সাহায্য করে।
- ধৈর্যধারণ করতে হবে: মানুষ ডিপ্রেশনের মধ্যে থাকলে তাদের মাঝে অস্থিরতা কাজ করে।যে কোন সমস্যায় তারা দ্রুত সমাধান চায়।আর তাৎক্ষণিক সমাধান না পেলে তারা আরো বিষণ্যতা হয়ে পড়ে।এ সময় আমাদের যা করা দরকার তা হলো ধৈর্যধারণকরতে হবে।প্রতিটি কাজের ক্ষেত্রেই আমাদের আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে যে সব কিছুরই সমাধান আছে এবং সবকিছু অতি শীঘ্রই ঠিক হয়ে যাবে।আমাদের আরও একটি কথা মাথায় রাখতে হবে যে বিষন্নতা একেবারেই যাবে না।ধীরে ধীরে মানসিক শান্তি ও আসবে এবং ডিপ্রেশন ও দূর হবে।
- প্রার্থনা করা: প্রতিটি মানুষই তার আশা এবং ইচ্ছে পূরণের মাধ্যমে বেঁচে থাকে।আর এই আশা পূর্ণতা পাওয়ার একমাত্র মাধ্যম হলো বিশ্বাস।এই বিশ্বাসটা থাকে ধর্মের প্রতি ও সৃষ্টিকর্তার প্রতি।সাধারণ মানুষ যখন ডিপ্রেশনে ভোগে তখন তাদের কোন আশার বিঘ্ন ঘটে।যার ফলে তারা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে।এ সময়টাতে সৃষ্টিকর্তার প্রতি সরল রাখা এবং নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসকে শক্ত করার মাধ্যমেই মানুষ তার মনের শক্তি খুঁজে পায়।
লেখক এর শেষ কথা
GAZI MAX IT এর পক্ষ থেকে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে আপনি জানতে পেরেছেন ডিপ্রেশন হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ১৪টি কারণ সম্পর্কে? এই আর্টিকেলটির মধ্যে থেকে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পাওয়ার বিষয়গুলো অবশ্যই আপনাকে মেনে চলতে হবে। বিশেষ করে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে তাদের বিষন্নতা বুঝতে হবে এবং শিশুদের মানিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।এগুলো অবশ্যই আপনাকে মেনে চলতে হবে।
ডিপ্রেশন হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ১৪টি কারণ সম্পর্কে?এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।ডিপ্রেশন হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ১৪টি কারণ সম্পর্কে লেখা এই আর্টিকেলটি যদি আপনার পড়ে ভালো লেগে থাকে,তবে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধবী ও পরিচিতদের মাঝে নিচের 👇 যেকোনো শেয়ার অপশন থেকে,শেয়ার করে দিতে পারেন।আপনার মতামত কমেন্ট বক্সে 👇 জানিয়ে দিতে পারেন (ধন্যবাদ)।
Comments
Post a Comment