Skip to main content

ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয় ২০টি বিষয় সম্পর্কে জেনে নিন

আপনারা হয়তো অনেকেই ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয় বিষয় সম্পর্কে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন।কিন্তু কোন ভাল ফলাফল পাননি।তবে এতে চিন্তার কোন কারণ নেই।আজকে আমার এই আর্টিকেলটিতে কিভাবে বুঝবেন ডায়াবেটিস হয়েছে কিনা?ও ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয় ২০টি বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন।বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিসের সংখ্যা বেড়েই চলছে।প্রতিবছর লাখ লাখ রোগী আক্রান্ত হচ্ছে এই ডায়াবেটিস রোগের।এমনকি এই রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক রোগী মারাও যাচ্ছে।ডায়াবেটিসের সাধারণ লক্ষ্যগুলো মোটামুটি সবাই জানে।রোগীদের রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা অনেক বেশি থাকে।ফলে স্নায়ু ও রক্তনালীর ক্ষতি হয়।
খুবই একটি বিপদজনক রোগের নাম হলো ডায়াবেটিস।ডায়াবেটি হলে রক্তের শর্করা ও গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা যায় আজকে আমরা আলোচনা করব,ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয় ২০টি বিষয় সম্পর্কে। কিভাবে বুঝবেন ডায়াবেটিস হয়েছে কিনা?ডায়াবেটিস রোগীদের কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত?কি করলে ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি মিলবে?ডায়াবেটিস জনিত রোগীদের পায়ের যত্ন নেয়ার কারণ সম্পর্কে।ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয় ২০টি বিষয় সম্পর্কে জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি আপনাকে মনোযোগ সহকারে করতে হবে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ

.

ভূমিকা

শরীরের যখন রক্তের সব চিনিকে গ্লুকোজ ভাঙতে না পারে, সাধারণত তখনই ডায়াবেটিস হয়।এই জটিল সমস্যার কারণেই মানুষের হার্ট স্ট্রোক করার সম্ভবনা থাকে।এছাড়াও ডায়াবেটিস হওয়ার কারণে মানুষ অন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং কিডনি ড্যামেজ হয়ে যেতে পারে।সারা বিশ্বেই যেন এই ডায়াবেটিস জনিত সমস্যাটি বেড়েই চলেছে।ডায়াবেটিস রোগীদের বিশেষ করে পায়ের যত্ন নিতে হয়।

ডায়াবেটিস কি সে সম্পর্কে জেনে নিন

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস হল নভেম্বর মাসের ১৪ তারিখ।১৪ই নভেম্বর ড্রাইভিং দিবস পালন করার একটি লক্ষ্য তা হল ডায়াবেটিস সম্পর্কে সবাইকে সচেতন হতে হবে।এই দিবসটি অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও মানুষের সচেতনতার লক্ষে পালন করা হয়।
ডায়াবেটিস মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে
  • টাইপ- ১: টাইপ ১ হলো যাদের শরীরে মোটেও ইনসুলিন তৈরি হয় না।তাদের পুরোপুরি ভাবেই নির্ভর করতে হয় ঔষধের উপর।টাইপ ১ জনিত ডায়বেটিস রোগীদের সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়।
  • টাইপ- ২: এ ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে সব সময় সতর্কতা অবলম্বন করে চললেই ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব।
এগুলো ছাড়াও আরো দুই ধরনের ডায়াবেটিস রয়েছে।তার মধ্যে একটি হলো যেস্টেশনাল বা গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস।আর অন্যটি হলো আদার স্পেসিফিক বা অন্যান্য যে কোন রোগের সাথে সম্পর্কিত ডায়বেটিস।তবে এগুলো খুব কম হয়।ডায়াবেটিস একটি বিপজ্জনক রোগ।ডায়াবেটিস রোগে গ্লুকোজ শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।আমাদের দৈনন্দিন খাবার গুলো থেকেই রপ্তা সরকারের একটি অংশ ব্যবহার করে আমাদের শরীরের কোষ গুলো শক্তি সৃষ্টি করে।আর সেই শক্তি দিয়েই আমরা দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্ম করে থাকি।
আমাদের শরীরের এই শক্তি উৎপাদন করার জন্যই অগ্নাশয় থেকে ‘ইনসুলিন’ নামক এক প্রকারের হরমোন নিঃসরণ হয়।কিন্তু কোন সমস্যা হওয়ার কারণে যদি অগ্নাশয় থেকে এই ‘ ইসুলিন’ নামক হরমোন না আসে তাহলে এই রক্তের গ্লুকোজ ও শর্করা দেহ খসে প্রবেশ করতে পারে না।ফলে আমাদের দেহের রক্তের শর্করা ও গুলোকোজ বৃদ্ধি পায়।একটি জরিপে দেখা গেছে যে, বিশ্বের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ১ জন ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয় এবং প্রতি ৫ সেকেন্ডে একজন মানুষ ডায়াবেটিস রোগের কারণে মৃত্যুবরণ করে।

কিভাবে বুঝবেন ডায়াবেটিস হয়েছে কিনা

  • ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
  • ঘন ঘন ও পিপাসা লাগা
  • শরীর দুর্বল লাগা
  • ঘোর ঘোর ভাব আসা
  • খাওয়ার চাহিদা বেড়ে যাওয়া
  • সময়মতো খাওয়া-দাওয়া না হওয়ার কারণে রক্তের শর্করা কমে হাইপো হওয়া
  • মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি চাহিদা বেড়ে যাওয়া
  • হঠাৎ করে শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়া
  • শরীরে অল্প কিছু কাটা ছেঁড়া হলেও সেটা দীর্ঘদিন থেকে যাওয়া
  • চামড়ায় খুসখুসে ও চুলকানি ভাব চলে আসা
  • নিজের মধ্যে সবসময় বিরক্তি কর ও মেধাজ ভাব থাকা
  • আগের তুলনায় চোখে কম দেখা

ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে কাদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি

সাধারণত মানুষের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব রোগ গুলো দেখা দেয়।যাদের বংশে ডায়াবেটিস আছে, তাদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বেশি থাকে।তাছাড়া যারা নিয়মিত শরীর চর্চা করে না এবং সারাদিন বসে থাকে তাদের ক্ষেত্রেও ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।আরও কিছু ডায়াবেটিস রোগের মধ্যে যাদের আশঙ্কা বেশি সে সম্পর্কে জেনে নেই।
  • নারী গর্ভাবস্থায় থাকাকালীন ডায়াবেটিস হতে পারে
  • হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর ডায়াবেটিস হতে পারে
  • যাদের শরীরে কোলেস্টেরল বেশি তাদের ক্ষেত্রেও ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে
  • উচ্চ রক্তচাপ রোগীদেরও ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে
  • শিশুদের ক্ষেত্রে যেসব শিশুর ওজন বেশি ও যাদের বাবা-মা-ভাই-বোন দাদা-দাদী নানা নানি বা ঘনিষ্ঠ আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে ডায়াবেটিস রয়েছে।সেইসব বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
  • যেসব শিশু গর্ভে থাকাকালীন অবস্থায় মায়েদের ডায়াবেটিস হয়।সেসব শিশুর ক্ষেত্রেও ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

ডায়াবেটিস বেশি হলে কি কি সমস্যা হয়

ডায়াবেটিসের এমন একটি সমস্যা যা সারা জীবনই বয়ে বেড়াতে হয়।ডায়াবেটিসের কারণে বিশ্বে প্রতিবছর মৃত্যুর হয় প্রায় ১০ লাখেরও বেশি।ডায়াবেটিসের আক্রান্ত হতে কোন বয়স লাগে না এটি যে কোন ব্যক্তিরই হতে পারে।এবার জেনে নেব ডায়াবেটিসের কারণে কি ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে সে সম্পর্কে–
  • রক্তে সিড়ির পরিমাণ বেশি হলে রক্তনালিতে মারাত্মক ধরনের সমস্যা হতে পারে।
  • যদি শরীরে ঠিকমতো রক্ত প্রবাহিত না হয় এবং শরীরের যেসব জায়গায় রক্তের প্রয়োজন সেখানে যদি রক্ত পৌঁছাতে না পারে,তাহলে রক্তের স্নায়ুতে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • ডায়াবেটিস বেশি হওয়ার কারণে মানুষের দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে ফেলার সম্ভবনা থাকে।
  • ডায়াবেটিসের কারণে পায়ে ইনফেকশন হতে পারে।
  • বিশেষ স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছেন, ডায়াবেটিস হওয়ার কারণে মানুষ অন্ধ হয়
  • হার্ট অ্যাটাক হওয়ার বড় কারণ হলো ডায়াবেটিস।
  • ডায়াবেটিসের কারণে কিডনি নষ্ট হয়।

ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা কত

বিশ্ব সাহিত্য সংস্থার হিসেবে ১৯৮০ সালে ডায়াবেটিস রোগীদের সংখ্যা ছিল ১১ কোটি।২০১৪ সালের হিসেবে দেখা গেছে রোগের আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা ৪২ কোটিরও বেশি।১৯৮০ সালের ১৮ বছরের বেশি বয়সী ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ছিল পাঁচ শতাংশেরও কম।কিন্তু ২০১৪ সালে এসে তাদের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ।ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফিডারেশন বলেছেন,ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষই মধ্য নিম্ন দেশগুলোতে।তারা আরো বলেছেন যে,২০১৬ সালের ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১৬ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয় ২০টি বিষয় সম্পর্কে জেনে নিন

লেডিস কমাতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে।এখন আমরা জানবো ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয় ২০টি বিষয় সম্পর্কে-

  1. প্রত্যেক বেলার খাবার সময়মতো খেতে হবে।
  2. সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো,পরিমাণ মতো খাবার খেতে হবে।তৈরি করা খাবার গুলো বেশি পরিমাণে খাওয়া যাবেনা। অল্প পরিমাণে খেতে হবে।
  3. ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভাত না খেয়ে রুটি খাওয়া ভালো।তবে কম পরিমাণে খেতে হবে।
  4. আঁশ যুক্ত খাবারের প্রবণতা বাড়াতে হবে।
  5. ময়দার রুটি ও মিলে ছাটা খাওয়া যাবেনা।এর বদলে আটার রুটি ও ঢেঁকি ছাড়া তাদের ভাত খাওয়া ভালো।গোল আলু বেশি খাওয়া যাবেনা।
  6. অতিরিক্ত লবণ জাতীয় খাবার থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে।
  7. চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে।
  8. প্রতিদিন অল্প পরিমাণে হলেও শাকসবজি বা ফলমূল খাওয়া উচিত।
  9. ফাস্টফুড,কোমল পানীয় খাওয়া যাবেনা ।
  10. প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ আর্সেনিকমুক্ত পানি খেতে হবে।
  11. বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরিবেশিত অস্বাত্থকর খাদ্য বর্জন করতে হবে।
  12. নিয়মিত শরীরকে সচল রাখতে হবে।এর জন্য ব্যায়াম করা উত্তম।
  13. অধিক সময় বসে কোন কাজ করবেন না।
  14. ল্যাপটপ বা কম্পিউটার চালানোর ক্ষেত্রে কাজের ফাঁকে কিছুক্ষণ পরপর হাঁটাচলা করতে পারেন।
  15. বেশি ক্ষুধার্ত হলে শসা খেতে পারেন।
  16. ধূমপান থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে।
  17. রক্তের গ্লুকোজ, লিপিড, রক্তচাপ ও নিজের শরীরের ওজন অবশ্যই প্রয়োজনমতো রাখতে হবে।
  18. নিয়মিত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করতে হবে
  19. সংক্রান্ত রোগীরা নিয়মিত ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞের কাছে চিকিৎসা নিবেন।
  20. ঠিকমতো ঔষধ খাওয়া, ব্যায়াম করা এবং বিশেষজ্ঞ উপদেশ মেনে চলতে হবে।

ডায়াবেটিস রোগীদের কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত

এতক্ষণে আমরা জানতে পেরেছি ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয় ২০টি বিষয় সম্পর্কে।এখন আলোচনা করব ডায়াবেটিস রোগীদের কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত সে সম্পর্কে।রক্তের ব্লাড সুগার বেড়ে যাওয়ার ভয়ে অনেকেই শর্করার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে।ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত রোগীরা শর্করা ছাটাই হয়ে গেছে বলেই চলে।কিন্তু আমরা নিয়ম মত খাবার খেতে পারলে এসব নিয়ে চিন্তা করার মানেই হয় না।সঠিক নিয়ম মেনে খাদ্য অভ্যাস করতে পারলে ডায়াবেটিস রোগীদের খাবার তালিকা কমানোর প্রয়োজন হয় না।

ডায়াবেটিস রোগীরা ও চাইলে পেট পুড়ে খেতে পারবে।শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়া নিষেধ।যেমন- বাত,রুটি,মিষ্টি,পাস্তা তাছাড়াও অনেক ধরনের খাবার খাওয়া নিষেধ।অনেক ধরনের খাবার নিষেধ থাকায় এত অল্প খাবারের কিভাবে পেট ভরা সম্ভব।যাই হোক আজকে আমরা জানবো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার কিছু খাবার সম্পর্কে।আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন,আপনাকে আর মেপে মেপে খাবার খেতে হবে না।খাবার খাওয়ার পরে আপনার পেতে খিদেও থাকবে না।
  • কাঁচা কিংবা সেদ্ধ করা সবজি খান: যেসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে আর্ট থাকে।সেসব ফল অনেকটাই শর্করা মেটাতে পারে।যেমন- বাদাম,মটর দানা,সিম জাতীয় খাবার তাছাড়া বুটটাতেও প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে।ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে বাঙ্গি,তরমুজ এ জাতীয় ফলগুলো খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারে আসে।এ জাতীয় ফলগুলো পেটে অনেক সময় থাকে এবং পেটের পরিপক্কতা সুস্থ রাখে।
  • মিষ্টি আলু: ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মিষ্টি আলু খাওয়া ভালো।মিষ্টি আলু খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকার সম্ভাবনা থাকে।কারণ মিষ্টি আলু রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।মিষ্টি আলু খেলে পেট ভরা থাকে।
  • চিনি ছাড়া চা খান: চায়ে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।বিশেষ করে এন্টিঅক্সিডেন্ট এর ক্ষেত্রে ব্ল্যাক টি এবং গ্রিন টি এর উপকারিতা বেশি।বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে গ্রিন টি বেশ সুলভ হয়ে উঠেছে।বাজারে বিভিন্ন মানের ব্ল্যাকটি থাকার কারণে এখনো তেমন সুলভ হয়ে উঠতে পারেনি।তবে শরীরকে চাঙ্গা রাখার জন্য ব্লেন্ড চা দিয়ে রং চা বানিয়ে সকাল ও রাতে খেতে পারেন।
  • অল্প পরিমাণে চর্বি জাতীয় খাবার: ডায়াবেটিস রোগীরা যে চর্বি জাতীয় খাবার একটুও খেতে পারবে না আসলে ব্যাপারটা এমনও নয়।তবে অবশ্যই অতিরিক্ত পরিমাণে চর্বি এবং ক্ষতিকর চর্বি খাওয়া যাবেনা।অলিভ অয়েল দিয়ে কিছু সালাত খেতে পারেন।এতে আপনার রকম কোন ক্ষতি হবে না।
  • প্রোটিনও খেতে পারবেন: ডায়াবেটিস রোগীদের প্রোটিন জাতীয় খাদ্য খেতেও মানা নেই।তবে দেখতে হবে আপনি কেমন ধরনের প্রোটিন খাচ্ছেন।লাল মাংস খাওয়া একেবারেই চলবে না।যেমন- গরুর মাংস একেবারেই খাওয়া যাবে না।তবে লিনমিট খেতে পারেন।যেমন- মুরগির মাংস,কোয়েল পাখির মাংস এমনকি কবুতরের মাংস খেতে পারবেন।পিনাট বাটার খেতে পারবেন।তবে বাদাম খেতে পারলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো।বাদাম থেকে ডায়াবেটিস রোগীরা প্রোটিন পাবেন।
  • অল্প পরিমাণে শরবত খাওয়া: ডায়াবেটিস রোগীরা সামান্য শরবত খেতে পারবেন।ডায়াবেটিস রোগীদের মাঝেমধ্যে শরবত খাওয়ার ইচ্ছে ও হতে পারে।তবে সব ধরনের ফলের শরবত খাওয়া যাবে না।বাঙ্গি কিংবা লেবুর রস দিয়ে শরবত খেতে পারবেন।তবে অবশ্যই চিনি মেশানো যাবে না।চিনি ছাড়া লেবু ও বাঙ্গির শরবত খেতে পারবেন।বরাবরই পানি আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী।লেবুযুক্ত বিট লবণ ফেলেবারের পানি আপনার জুস খাওয়ার ইচ্ছেটা মিটাবে।

কি করলে ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি মিলবে

  • প্রতিদিন কমপক্ষে এক ঘন্টা হাটুন: আমাদের দৈনন্দিন জীবনে পরিশ্রম করা এবং হাঁটার প্রবণতা আগের তুলনায় অনেকটাই কমে গেছে।সকলের মোবাইল এবং কম্পিউটারে অভ্যস্ত।যাদের ফ্যামিলিতে কোন সদস্য ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বেশি থাকে।ফলে তারা যদি আগে থেকেই পরিশ্রম করার এবং হাটা চলার অভ্যাস রাখে।তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডায়াবেটিসের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে।এজন্য নিয়ম করে প্রতিদিন এক ঘণ্টার মতো থাকা উচিত।পাশাপাশি ব্যায়াম করা ও খেলাধুলা করার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।
  • ধূমপান ও মদ্যপান ছাড়তে হবে: ধূমপান শুধু ডায়াবেটিস হওয়ারই কারণ নয়।এছাড়াও অনেক রোগ হতে পারে ধূমপানে অভ্যস্ত থাকার কারণে।চিকিৎসকরা বলেছেন, ডায়াবেটিসের প্রতিকার করতে হলে সবচেয়ে প্রথমেই যে কাজটি করতে হবে তা হল- ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে।কারণ এগুলো খেলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
  • মিষ্টি জাতীয় খাবার পরিহার করুন: স্থুলতা বা মোটা হয়ে যাওয়ার কারণে ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।যে সকল খাবার খেলে মোটা হয়ে যায় এবং যে খাবারগুলোতে স্থুল হয়ে যায়,এমন খাবার পরিহার করতে হবে।সাধারণত মিষ্টি জাতীয় খাবার গুলো হলো ফাস্টফুড,কোমল পানীয়,ভারী খাবার এগুলো খেলেস্থুলতা অনেক বেড়ে যায়।শরীরের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।যেন অনেক মোটা ও ওজন বেড়ে না যায়।বিশেষজ্ঞরা মিষ্টি,ফাস্টফুড,পোলাও,বিরিয়ানি এ ধরনের বাড়ির খাবার এগিয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন।
  • ডায়াবেটিস কমাতে সালাত খান: গাজর,শসা,টমেটো,লেটুস,পেঁয়াজ মিশিয়ে প্রতিদিন অন্তত এক বাটি চালাক খেতে পারেন।নিয়ম করে প্রত্যেকদিন দুপুরে কিংবা রাতে খাবারের আগে খেতে হবে । সালাতের সাথে এক চামচ ভিনেগার ও মিশাতে পারেন।ভিনেগারে কম মাত্রায় রক্ত শোষণের সহায়তা করে।
  • দারুচিনি খেতে পারেন: আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় দারুচিনি তেল বা পাউডার আকারে নিয়মিত রাখতে পারেন।এতে আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৪৮% কমে যাবে।গবেষণায় দেখা গেছে, দারুচিনি খেলে অস্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইট এর মাত্রা কমায়।এই দুইটি মাত্রা কমে গেলে শরীরে রক্তের সুগারের মাত্রা ও নিয়ন্ত্রণে থাকে।এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।
  • মানসিক চাপ থেকে নিজেকে দূরে রাখুন: মানসিক চাপের কারণে মাথাব্যথা থেকে শুরু করে ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগও হতে পারে।আপনি যদি এমন ব্যক্তি হয়ে থাকেন যে নিয়মিত মানসিক চাপে ঢুকতে হয় আপনাকে।তাহলে এমন কিছু নিয়ম মেনে চলুন,যা করলে আপনার মানসিক চিন্তা কমে।যেমন- ব্যায়াম করা এবং নিজেকে রিলাক্স রাখার মাধ্যমেও আপনার মানসিক চিন্তা কমাতে পারেন।এতে আপনার ডায়াবেটিসের রোগ কমবে।
  • ডায়াবেটিস কমাতে পাড়ে কফি: গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ২ কাপ কফি খেলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস এর ২৯% ঝুঁকি কমে।শর্ত হলো চিনি ছাড়া কফি খেতে হবে।কফিতে থাকে এন্টিঅক্সিডেন্ট।যা ডায়াবেটিস কমাতে সহায়তা করে।

ডায়াবেটিস জনিত রোগীদের পায়ের যত্ন নেয়ার কারণ সম্পর্কে জেনে নিন

ডায়াবেটিস জনিত রোগীদের পায়ের যত্ন নেয়া খুবই প্রয়োজন।যত্ন না নিলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।জেনে নিন পায়ে সমস্যা হওয়ার কারণগুলো সম্পর্কে-


  • পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি: ডায়াবেটিস জনিত রোগীদের স্নায়বিক ক্ষতি থাকার কারণে পায়ের স্নায়ুর অনুভূতির ক্ষমতা কমে যায়।স্নায়ু অনুভূতি কমে যাওয়ার কারণে তারা পায়ের ব্যথা কিংবা চাপ লাগা অনুভব করতে পারে না।এর ফলে পায়ে ছোটখাটো আঘাত লাগলে,ফোসকা পড়লে এবং ক্ষত হলে তারা অনুভব করতে পারে না।এমন ছোটখাটো বিষয়গুলো একসময় বড় ধরনের ক্ষতিতে পরিণত হয়।অনেক সময় জীবনের আক্রান্তও হয়।
  • হাইপার গ্লাইসেমিয়া: রক্তে অতিরিক্ত শর্করা থাকলে,ডায়াবেটিস জনিত রোগীদের কোথাও ক্ষত হলে তা দ্রুত সারে না।যারা ডায়াবেটিস জনিত রোগী তাদের পায়ে যত্ন নেয়া অতি জরুরি।ঠিকমত যত্ন না নিলে পায়ে ক্ষত সংক্রমনে আক্রান্ত হতে পারে।এই ছোট ছোট কতগুলো থেকেই একসময় বড় ধরনের সংক্রমণ হতে পারে।সমস্যা বেশি হলে এমন কি পা কেটে ফেলাও লাগতে পারে।
  • পেরিফেরাল বাশকুলার ডিজিজ: ডায়াবেটিস জনিত রোগীদের রক্ত ব্লগ হয়ে রক্ত কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।এ কারণে কোন ক্ষত হলে তা সহজে সিারে না।
পায়ের যত্ন কিভাবে নিতে হবে
  • ডায়বেটিস রোগীদের সব সময় পা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও শুষ্ক রাখতে হবে এবং প্রতিদিন পা পরীক্ষা করাতে হবে।
  • জুতা পড়ার ক্ষেত্রে নরম ও আরামদায়ক জুতা পড়তে হবে।
  • নিয়মিত পায়ের নখ কাটতে হবে।নখ বেশি ছোট ও কোনা করে কাটা যাবে না।কারণ নখের কোনা থাকার কারণে পায়ে ক্ষত হতে পারে।
  • কুসুম গরম পানিতে পা ধুইতে হবে।ঠান্ডা বা অতিরিক্ত পানিতে পা ধোয়া যাবেনা।
  • পায়ে মশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।তবে পায়ের আঙ্গুলের থাকে মশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত নয়।
  • পায়ে কোন পরিবর্তন দেখা দেয় কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যদি পায়ের কোন পরিবর্তন দেখে থাকেন,তাহলে শীঘ্রই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে

লেখকের শেষ মন্তব্য

GAZI MAX IT এর পক্ষ থেকে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে আপনি জানতে পেরেছেন ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয় ২০টি বিষয় সম্পর্কে? এই আর্টিকেলটির মধ্যে থেকে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো আপনাকে নিয়মিত খাবার খেতে হবে এবং বিশেষ করে পায়ের যত্ন নিতে হবে।ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাওয়া বিষয়গুলো অবশ্যই আপনাকে মেনে চলতে হবে।

ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয় ২০টি বিষয় সম্পর্কে লেখা এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয় ২০টি বিষয় সম্পর্কে লেখা এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে,তবে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধবী ও পরিচিতদের মাঝে নিচের 👇 যেকোনো শেয়ার অপশন থেকে,শেয়ার করে দিতে পারেন।আপনার মতামত কমেন্ট বক্সে 👇 জানিয়ে দিতে পারেন (ধন্যবাদ)।

Comments

Popular posts from this blog

সুন্দরবন হোটেল বা রিসোর্ট বুকিং করার নিয়ম সম্পর্কে জানুন -২০২৪

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের অনলাইনে টিকিট কাটা - ভ্রমণ করার সকল নিয়ম

মুক্তা চাষ কিভাবে করবেন এবং মুক্তা চাষের জন্য কোথা থেকে প্রশিক্ষণ নিবেন