আপনারা হয়তো অনেকেই গরুর মাংসের পুষ্টিগত গুণগুলো সম্পর্কে ও গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং মজার মজার রেসিপি সম্পর্কে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন।কিন্তু কোন ভাল ফলাফল পাননি।তবে এতে চিন্তার কোন কারণ নেই।আজকে আমার এই আর্টিকেলটিতে গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং মজার মজার রেসিপি সম্পর্কে জানতে পারবেন।বিশেষ করে কোরবানির ঈদের সময় সবারই গরুর মাংস একটু বেশি খাওয়া পড়ে।আত্মীয়-স্বজন,পাড়া-প্রতিবেশী এবং গরিবদেরকে দিয়েও নিজেদের জন্য মাংস একভাগ থেকে যায়।গরুর মাংস দিয়ে তৈরি করা যায় মজার মজার রেসিপি।
গরুর মাংস দিয়ে তৈরি করা যায় অনেক ধরনের সুস্বাদু খাবার।যা দেখলে মুখ ফিরিয়ে নেয়া যায়না।আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে তারা মনে করে গরুর মাংস খাওয়া ক্ষতিকর।তাই তারা গরুর মাংস খেতে ভয় পায়।সত্যিই কি গরুর মাংস খাওয়ার ক্ষতিকর? এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং মজার মজার রেসিপি সম্পর্কে?ও গরুর মাংসের পুষ্টিগত গুণগুলো সম্পর্কে।গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং মজার মজার রেসিপি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আপনাকে এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
ভূমিকা
ঈদ মানেই আনন্দ।আর কোরবানির ঈদ মানেই হল গরুর মাংসের বিশাল সমাহার।নানা ধরনের গরুর মাংসের রেসিপিতে মুসলিম পরিবারের খাবারের স্বাদে মৌ মৌ করে প্রতিটি ঘর।আর এই ঈদ হল গরুর মাংস প্রিয় মানুষের কাছে মেঘ না চাইতেই বৃষ্টির মতো।সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ঘরের মধ্যে চলে খাওয়া-দাওয়ার মহড়া।শুরু হয় এক ভুরি বোঝের মহোৎসব।কুরবানীর ঈদের সময় গরুর মাংস দিয়ে নানা ধরনের তৈরি রেসিপি দেখে আপনারা অনেকেই লোভ সামলাতে পারেন না।তবে আপনি যতই গরুর মাংস পাগলা হন না কেন,আপনাকে পরিমাণ মতো খেতে হবে।তবে রান্নাটাও চাই সুস্বাদু।
গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা কি
গরুর মাংস থাকে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল।তাই অনেকেই গরুর মাংস খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলেন।পুষ্টিবিদ্যা জানিয়ে জানিয়েছেন,গরুর মাংসের অপকারিতা থাকলেও তেমনিভাবে গরুর মাংসে রয়েছে অনেক উপকারিতাও।গরুর মাংসের এমন কিছু পুষ্টিগুণ আছে।যা অন্য কোন খাবার থেকে পাওয়া যায় না।এখন গরুর মাংস কতটা উপকারী না উপকারী সেটা নির্ভর করবে আপনার খাওয়ার নিয়মের উপর।
শিশুদের বৃদ্ধিতে গরুর মাংস কতটা সহায়তা করে
গরুর মাংস আমাদের শরীরের বুদ্ধি- ভিত্তিক গঠন, শারীরিক বর্ণনা রক্ত যোগাড় দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।৯-১৩ বছর বয়সী শিশুদের জন্য দৈনিক চাহিদা অনুযায়ী ৮৫ গ্রাম গরুর মাংসে থাকে-
গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা অনেক।চলুন এবার জেনে নেই বাচ্চাদের ক্ষেত্রে গরুর মাংস কতটা উপকারী-গরুর মাংস শরীরের খনিজের অভাব দূর করে:গরুর মাংস আমাদের শরীরের খনিজের অভাবে অনেক বড় ধরনের অসুখ-বিসুখ দূর করতে সহায়তা করে।গরুর মাংস থাকে ফসফরাস,সেলেনিয়াম এবং জিংক।গরুর মাংসে থাকে প্রচুর পরিমাণে লৌহ।তাই এই মাংসই ভিটামিনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।গরুর মাংস থাকে ভিটামিন বি৩,ভিটামিন বি৬ ও ভিটামিন বি১২ ইত্যাদি।
- গরুর মাংস প্রটিনের ভালো একটি উৎস: গরুর মাংস থাকে প্রোটিন।তাছাড়াও গরুর হাড়,কলিজা,মগজেও প্রোটিন থাকে।এইটিন থেকে পাওয়া যায় এমাইনো এসিড।যা আমাদের শরীরের হাট ও মাংসপেশি ভালো রাখে।১০০ গ্রাম গরুর মাংসে ২২.৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে।
- গরুর মাংসে জিঙ্কের ঘাটতি পুরন করে: আমাদের সুস্থ থাকার জন্য জিঙ্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।জিঙ্ক আমাদের শরীরের কোষ ভালো রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।৮৫ গ্রাম গরুর মাংস আমাদের শরীরের ৩৯ শতাংশ জিঙ্কের গাঢি পূরণ করে।
আরো পড়ুনঃ খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কার জন্য কতটুকু গরুর মাংস খাওয়া নিরাপদ
সাধারণত আমাদেরকে কোরবানির ঈদের পরপর দিনগুলোতে গরুর মাংস অনেক বেশি খাওয়া হয়।তাই এই সময়টাতে আমাদের অন্য প্রোটিন জাতীয় খাবার গুলো থেকে নিজেকে দূরে রাখা উচিত।আর এই সময়টাতে কখনোই প্রত্যেকদিন গরুর মাংস খাওয়া উচিত নয়।গরুর মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে আমরা যদি আমাদের শরীরের ক্ষতি না চিই তাহলে অবশ্যই গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং মজার মজার রেসিপি সম্পর্কে জানতে হবে।পুষ্টিবিদ তাসনিম হাসিন বলেছেন,গরুর মাংস খাওয়ার নিরাপদ নিয়ম হলো সপ্তাহের দুইদিন গরুর মাংস খাওয়া এবং মোট তিন থেকে চার বেলা খাওয়া যাবে।
সপ্তাহের দুই দিনে আপনি ১৪৫ গ্রাম গরুর মাংস খেতে পারবেন এবং প্রতিবেলায় আপনি শুরু থেকে ২৬ গ্রাম মাংস খেতে পারবেন।এটাকে আরো সহজ ভাষায় বললে,আপনাকে প্রতিবেলায় দুই থেকে তিন পিস মাংস খেতে হবে।এরচেয়ে বেশি খাওয়া যাবে না।তবে যারা হৃদরোগ,হাইপার-টেনশন বা কিডনি রোগে আক্রান্ত।সেক্ষেত্রে তাদেরকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মাংস খাওয়া উচিত।সাধারণত এ সব রোগীরা সপ্তাহে এক থেকে দুই বেলা মাংস খেলে তেমন কোন ক্ষতি বা ঝুঁকি নেই।তবে চিকিৎসকরা যদি একেবারেই গরুর মাংস খেতে না করে তাহলে খাওয়া যাবে না।
আমাদের বয়স,স্বাস্থ্য এবং শারীরিক পরিশ্রমের উপর নির্ভর করে প্রতিদিন ১২০০-২০০০ পর্যন্ত ক্যালরির প্রয়োজন।এখন সপ্তাহে আমরা যদি একবেলা চর্বি ছাড়া মাদারী আকারের ২-৩ পিচ মাংস খাই সেটা থেকে আমাদের শরীরে ক্যালরি আসবে ৬২ যা আমাদের শরীরে ৩% থেকে ৫% ক্যালরি যোগাবে।তাই গরুর মাংস খেলেই যে অনেক পরিমাণে ক্যালরি যোগাবে আসলে বিষয়টা এমন নয়।যারা ভাবতেন গরুর মাংসের অনেক পরিবারের কোলেস্টেরল থাকে আসলে তাদের ধারণাটি ভুল।
গরুর মাংসের পুষ্টিগত গুণগুলো সম্পর্কে জানুন।
পুষ্টিবিদগণরা বলেছেন গরুর মাংস থেকে আমরা আমাদের শরীরে প্রয়োজনমতো প্রোটিন পেয়ে থাকি।গরুর মাংসের আরও রয়েছে ভিটামিন ,মিনারেল ও খনিজ উপাদান ।চলুন এবার জেনে নেই এই পুষ্টিগত উপাদান গুলো থেকে আমাদের কি কি উপকার হয়–
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে
- পেশি,দাত এবং হাড়ের গঠন বাড়াতে সাহায্য করে
- ত্বক,চুল এবং নখের স্বাস্থ্যগত দিক ভালো রাখে
- আমাদের শরীর বৃদ্ধি করে এবং বুদ্ধি বাড়াতে সহায়তা করে
- আমাদের শরীরের ক্ষত জায়গাগুলো সারাতে সাহায্য করে
- অতিরিক্ত আলসেমি,ক্লান্তি ও শরীরের অসাধনা দূর করে কাজের এনার্জি বাড়াতে সহায়তা করে।
- ডায়রিয়া প্রতিরোধ ক্ষমতা রাখে
- দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়
- মানসিক চিন্তা ও হতাশা দূরে রাখে
- খাবার থেকে আমাদের দেহে শক্তি যোগায়
- রক্তস্বল্পতা দূর করে
ঝুঁকি কমাতে গরুর মাংস কিভাবে খেতে হবে
গরুর মাংস আপনার জন্য কতটা ঝুঁকিপূর্ণ সেটা নির্ভর করবে আপনি কিভাবে গরুর মাংস কাটছেন এবং রান্না করছেন তার উপর।যুক্তরাষ্ট্রের একটি হেলথ জার্নাল জানিয়েছেন,গরুর শরীরে দুইটি অংশে চর্বি কম থাকে।তা হলো-গরুর পিছনের পায়ের রানের উপরের দিকের অংশ।এটাকে রাউন্ড বলা হয়।অন্যটি হলো গরুর পিছনের দিকের উপরের অংশের মাংস যাকে বলা হয় সেরলয়ে।গরুর মাংস রান্নার আগে মাংসে থাকা চর্বিগুলো যদি কেটে ফেলে দেয়া হয় সে ক্ষেত্রে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কম থাকে।
তাই গরুর মাংস রান্না করার আগে মাংসের লেগে থাকা চর্বিগুলো কেটে ফেলে দিতে হবে।গরুর মাংসে থাকা চর্বিগুলো কমাতে কিছুক্ষণ পানিতে সিদ্ধ করতে হবে।এরপর দেখবেন পানিতে চর্বির স্তর উঠে আসছে।গরম পানির মধ্যে মাংস কিছু গুন ফোটানোর পর পুরো পানিটা ফেলে দিতে হবে।যদিও পানির সাথে মাংশে থাকা ভিটামিনস ও মিনারেল বেরিয়ে যাবে।এরপর পরিমাণ মত তেল দিয়ে মাংসগুলো রান্না করে নিন।তবে ঘি,মাখন,ডালডা এমন জাতীয় তেল দেয়া যাবে না।মিসেস হাসিল বলেছেন,ফ্যাট কমাতে লেবুর রস বা টক দই দিয়ে মাংস রান্না করতে পারেন।
মাংসের বেশি পরিমাণে তেল ও মসলা দিয়ে ভুনা রান্না করার চেয়ে ঝোল ঝোল মাংস রান্না করাই ভালো।গরুর মাংস কম পরিমাণে খাওয়ার জন্য মাংসের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের বজি দিতে পারেন।যেমন- মিষ্টি কুমড়া,লাউ,ফুলকপি,পেঁপে,শসা,আলু,বিটকপি এবং ফুলকপি।এছাড়াও গরুর মাংস কম খাওয়ার জন্য মাংসের কাবাব বানানোর সময় কিমার সাথে ডাল বা অন্যান্য খাদ্য উপাদান গুলো মিশাতে পারেন।গরুর মাংস ফ্রিজের মধ্যে কিংবা কিছুক্ষণ ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখার মাধ্যমে ও তেলের আস্তর উঠিয়ে ফেলে দিতে পারেন।এতে আপনার ফ্যাট অনেকটাই কমার সম্ভাবনা থাকবে।
গরুর মাংস দিয়ে নানা ধরনের রেসিপি সম্পর্কে জেনে নিন
ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদে সবার ঘরেই থাকে গরুর মাংস।সকাল,দুপুর ও রাত সব বেলাতেই থাকে গরুর কোনো না কোনো পদ।অনেকে সময়ে স্বল্পতার জন্য এবং অতিরিক্ত ঝামেলার জন্য এক বা দুই পদের বেশি গরুর মাংস রান্না করে না।আবার অনেকের সময় থাকলেও রেসিপি না জানার কারণে গরুর মাংসের খাবার খাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে হয়।গরুর মাংসের কিছু সহজ রেসিপি রয়েছে তা জানলে আপনিও রান্না করতে পারবেন গরুর মাংসের মজাদার রেসিপি।আজকে এই আর্টিকেলটিতে জানতে পারবেন খুব সহজেই গরুর মাংসের মজার মজার রেসিপি সম্পর্কে-
গরুর মাংসের কালা ভুনা রেসিপি কিভাবে কর
কেনা পছন্দ করে গরুর মাংসের কালা ভুনা খেতে।এই কালা ভুনা খেতে খুবই সুস্বাদু।কালো ভুনা পেলে যেন অন্য কোন কিছুর দিকে নজরই না পড়ে।তবে অনেকেরই ভাবনা ঘরে কালা ভুনা বানানো অনেকটা মুশকিল।কিন্তু এই ধারণাটি একদমই ভুল। কারণ ঘরে বসেও খুব সহজেই তৈরি করতে পারবেন কালা ভুনা। তাহলে আর দেরি কিসের এখনই জেনে নিন কালা ভুনা তৈরি করার রেসিপি।
গরুর মাংসের কালা ভুনা রেসিপি নিয়ম-
গরুর মাংসের কালা ভুনা খেতে বেশ লাগে।তবে এর সাথে চাই পোলাও,পরোটা,রুটি,খিচুড়ি কিংবা গরম ভাতের সাথে কালা ভুনা রেসিপি।এই গরুর কালো ভুনা রেসিপিটি বিভিন্ন আয়োজনে ও অতিথি আপ্যায়নেও রাখতে পারেন।তার জন্য দরকার গরুর মাংসের কালা ভুনা রেসিপির সঠিক নিয়ম জানা।চলুন এবার জেনে নেয়া যাক গরুর কালো ভুনা তৈরি করার রেসিপি।
গরুর মাংসের কালা ভুনা তৈরি করার নিয়ম
প্রথমে মাংসগুলো খুব ভালো করে ছোট ছোট করে কেটে নিতে হবে।গরুর মাংসগুলো ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে এবং ছাকনির উপর রেখে ভালোভাবে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে।তেল ও লবণ সহ সব ধরনের মসলা দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে নিতে হবে।মসলাগুলো মাংসের সাথে ভালো করে মেশানো হয়ে গেলে ঢাকনা দিয়ে ১ ঘন্টা ঢেকে রাখতে হবে।মাখানোর পর মাংসগুলো চুলায় হালকা আঁচ রেখে জাল দিতে হবে।তারপর মাংসে দুই কাপ পানি দিয়ে দিতে হবেএবং ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
আরো পড়ুনঃ তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
পানি শুকিয়ে গিয়ে মাংস নরম হয়ে গেলে মাংসের পাত্রটি নামিয়ে রাখতে হবে।এবার একটি ফ্রাইপ্যানে পরিমান মতো তেল দিয়ে গরম করে নিন।এবার কুচি করা পেঁয়াজ ও মরিচ গুলো ভালো করে ভেজে নিন।পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচ কুচিগুলো সোনালী রং হয়ে এলে এর মধ্যে গরুর মাংস দিয়ে দিন।এবার হালকা আঁচে বাজতে থাকুন।মাংস যতক্ষণ পর্যন্ত কালো না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত নাড়তে থাকুন।মাংসের দিকে খেয়াল রাখতে হবে,যাতে মাংস পুড়ে না যায়।এরপর নামিয়ে পরিবেশন করে নিন।
কালা ভুনা বাগাড় দেয়ার জন্য কি করতে হবে
- আধা কাপ পরিমাণে সরিষার তেল নিতে হবে
- আধা টেবিল চামচ পরিমাণে আদা কুচি নিতে হবে
- ছয় সাতটার মত শুকনো মরিচ এবং
- প্রয়োজন মত গরম পানি দিতে হবে
শাহী রেজালা রেসিপি: গরুর মাংস আপনি যেভাবেই খান না কেন,গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতার জন্য শেষ নেই।কোরবানির সময় গরুর মাংস দিয়ে শাহী রেজ্বালা ছাড়া যেন কল্পনাও করা যায় না। সহজ এই রেসিপিটি হয়তো সবার কাছেই পরিচিত।চলুন জেনে নেই কিভাবে তৈরি করবেন গরুর মাংসের শাহী রেজ্বালা-
শাহী রেজ্বালা তৈরি করতে যা লাগবে:-
গরুর মাংস ১ কেজি,পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ,আদা বাটা,রসুন বাটা,হলুদ,জিরা,ধনিয়া,লবণ,কিসমিস,আলু,বুখারা,টক দই,দই ফল,গরম মসলা,তেজপাতা,তেল,এলাচি দারুচিনি,কাঁচা মরিচ বাটা,চিনি,বাদাম বাটা
যেভাবে রান্না করতে হবে: প্রথমেই মাংস ভালো করে বুঝে নিতে হবে।এবার সব উপকরণগুলো পরিমাণমতো নিতে হবে এবং অল্প পরিমাণে দই ও পানি দিয়ে এক ঘন্টা প্রস্তুত করে রেখে দিন।এরপর মাংস,তেল,কাঁচামরিচ বাটা,আদা,রসুন,হলুদ দিয়ে ভালোভাবে মাংসের সাথে মিশিয়ে নিন।মেশানো হয়ে গেলে প্রস্তুত করুন মিশ্রণটি চুলায় বসিয়ে দিন।অল্প আঁচে গরম দিতে হবে এবং মাংস সিদ্ধ হচ্ছে কিনা তা কিছুখন পর পর দেখে নিতে হবে।যদি দেখেন মাংস সিদ্ধ হয়ে গেছে তখন কিসমিস ও আলুবোখারা দিয়ে দিন।এরপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন এবং অল্প আচে আরো কিছুক্ষণ সময় জাল দিতে থাকুন।এবার দেখে নিন ঝাল,লবণ ঠিকমতো হয়েছে কিনা।তারপর বাগার দিয়ে আবারও কিছু সময় ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখুন।অল্প কিছু সময়ের মধ্যে হয়ে যাবে গরুর মাংসের ছাদের সেই রেজালা রেসিপি।
কড়াই গোস্ত: গরুর কড়াই গোস্ত পছন্দ করে না এমন মানুষ কমই আছে।কোরবানি ঈদে গরুর মাংস রান্না করা রেসিপির মধ্যে একটি অন্যতম হলো কড়াই গোস্ত।
উপকরণ:
প্রস্তুত প্রণালী: গরুর মাংস ভালো করে ধুয়ে নিয়ে।একটি চালনি পাত্রে রেখে মাংসের গায়ে থাকা পানি সম্পূর্ণভাবে ঝরিয়ে নিন।এবার একটি পাত্রে মাংস সহ টক দই,লবণ ও সব মসলা একসঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে নিন এবং ২৫ থেকে ৩০ মিনিট মেরিনেট করে রাখুন।হাড়িতে তেল গরম করে নিন।পেঁয়াজকুচি অর্ধেক,দার্জিলিং,তেজপাতা এলাচ হালকা বাদামি করে ভেজে নিন।এরপর মেরিনেট করা মাংস দিয়ে কষাতে থাকুন।বসানো হয়ে গেলে পরিমান মত পানি দিয়ে মৃদু আঁচে রান্না করতে হবে।
কিছুক্ষণ পর পর দেখে দিতে হবে মাংস সিদ্ধ হচ্ছে কিনা।মোটামুটি ভাবে সিদ্ধ হয়ে গেলে এবং মাংসের উপর তেল ভেসে উঠলে হাড়ি নামিয়ে রাখুন।অন্য একটি হাড়িতে তেল গরম করতেবসিয়ে দিন এবং পেঁয়াজ কুচি,রসুন,টমেটো দিয়ে হালকা বাদামি করে বাজে নিন।বাজা হয়ে গেলে মাংস রাখা হাড়ির মধ্যে এগুলো ঢেলে দিয়ে ২/৩ মিনিট অল্প আঁচে রেখে হাড়ি নামিয়ে ফেলুন।এভাবেই তৈরি হয়ে যাবে কড়াই গোস্ত।
গরুর মাংসের গার্লিক বিফ: এই খাবারটি রেস্তোরাতে বানানো হয়ে থাকে।যারা রেস্তোরাঁর খাবার খেতে অভ্যস্ত তারা বাড়িতেও রান্না করে নিতে পারবেন গার্লিক বিফ।যারা জাল খেতে পছন্দ করেন তাদের জন্য এটি অনেক পছন্দের মানুষের আইটেম।
উপকরণসমূহ:
প্রস্তুতকরণ: প্রথমে মাংস ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।এরপর চালুনির পাত্রে রেখে মাংসের গায়ে থাকা পানি ভালো করে ঝরিয়ে নিন।এবার একটি হাঁড়িতে মাংস,তেল,টক দই,হলুদ/মরিচের গুঁড়ো,আদা,রসুন,পেঁয়াজ ও লবণসহ নিয়ে নিট করে রাখুন।এভাবে আধাঘন্টা রাখতে হবে।অন্য একটি হাঁড়িতে তেল গরম করে পেঁয়াজ বাদামি করে ভেজে নিন এবং মাংস দিয়ে কষাতে থাকুন।কষানো হয়ে গেলে সামান্য একটু পানি দিয়ে ঢেকে রাখুন।দেখতে হবে মাংস সিদ্ধ হয়ে আসছে কিনা।অল্প পরিমাণে সিদ্ধ বলে তখন টমেটো সস, কাঁচা মরিচ ও রসুনের কোয়া দিয়ে দিন।এভাবে ১০ মিনিট রেখে নামিয়ে ফেলুন এবং আপনার ইচ্ছামত পরিবেশন করি।
গরুর মাংস খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত গরুর মাংস খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকারক।কারণ গরুর মাংসে থাকে অতিরিক্ত পরিমাণে সোডিয়াম।আর সোডিয়াম থাকার কারণে শরীরে রক্তচাপ বেড়ে যায়।তারপর উচ্চ রক্তচাপ থেকে দেখা দেয় হৃদরোগ ও কিডনি জনিত জটিলতা সমস্যায়।গরুর মাংসে থাকা কোলেস্টেরল অতিরিক্ত বেড়ে গেলে হার্টের শিরায় রক্ত জমাট বাঁধিয়ে দেয়।যার ফলে হাত পর্যন্ত রক্ত যেতে পারে না এবং এর জন্য অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়।যার কারনে হৃদরোগ ও হার্ট এটাকের সম্ভাবনা বেশি থাকে।এক গবেষণায় বলা হয়েছে, গরুর মাংস বেশি খেলে ক্যান্সারের যুকিও বেড়ে যায়।
এছাড়াও গরুর মাংস বেশি খেলে টাইট-টু ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।গরুর মাংস বেশি খেলে ত্বকের সমস্যা ও মুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।গরুর মাংসে থাকে এনাফিলেক্সিস নামে সৃষ্টি যৌগ।যাতে এলার্জির প্রক্রিয়া সৃষ্টি করার সম্ভাবনা থাকে।তাই গরুর মাংস খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞদের থেকে জেনে নিন আপনার কতটুকু মাংস খাওয়া প্রয়োজন।আশা করি আর্টিকেলটির শুরু থেকে এ পর্যন্ত আপনি গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং মজার মজার রেসিপি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
লেখকের শেষ কথা
GAZI MAX IT এর পক্ষ থেকে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে আপনি জানতে পেরেছেন গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং মজার মজার রেসিপি সম্পর্কে? এই আর্টিকেলটির মধ্যে থেকে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো গরুর মাংস বেশি খাওয়া যাবেনা।যে পরিমাণে আপনার গরুর মাংস খাওয়া উচিত সেটুকুই খেতে হবে।অবশ্যই গরুর মাংসের অপকারিতা গুলো খেয়াল রাখতে হবে।গরুর মাংসের পুষ্টিগত গুণগুলো সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে।এই বিষয়গুলো অবশ্যই আপনাকে মেনে চলতে হবে।
গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং মজার মজার রেসিপি সম্পর্কে লেখা এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং মজার মজার রেসিপি সম্পর্কে লেখা এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে,তবে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধবী ও পরিচিতদের মাঝে নিচের 👇 যেকোনো শেয়ার অপশন থেকে,শেয়ার করে দিতে পারেন।আপনার মতামত কমেন্ট বক্সে 👇 জানিয়ে দিতে পারেন (ধন্যবাদ)।
Comments
Post a Comment