আমরা সকলেই জানি তুলসী পাতার রয়েছে অনেক গুণ।কিন্তু আমাদের হয়তো অনেকেরই অজানা তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি? সে সম্পর্কে।প্রত্যেকটি হিন্দু বাড়িতেই তুলসী গাছ থাকে।কারণ হিন্দুরা তুলসী গাছের পুজো করে থাকেন।তুলসী পাতা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকার।আপনি কি জানেন তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে পেটের কোন সমস্যা থাকে না।তাছাড়াও ত্বককে করে উজ্জ্বল।
তুলসী পাতা উপকারিতা সবারই জানা আছে।কিন্তু তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি সে কথা অনেকেরই অজানা।ঔষধি গাছ হিসেবে তুলসী পাতা বেশ পরিচিত আজকে আমরা জানবো তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি?কাশির জন্য তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম? তুলসী পাতার ঔষধি গুনাগুন কি?তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি? এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আপনাকে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে করতে হবে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ
.
ভুমিকা
তুলসী একটি চিরহরিৎ গুল্ম প্রজাতির উদ্ভিদ।তুলসী গাছ আমাদের অতি সুপরিচিত একটি গাছ।তুলসী গাছ মূলত ঔষধি গাছ হলেও বাড়ির ছাদ,জানাল,বারান্দায় শোভা বর্ধক হিসেবেও কাজ করে।এই গাছ প্রচুর অক্সিজেন দিয়ে থাকে।তাই বায়ু পরিষ্কারক গাছ হিসেবেও তুলসী গাছ পরিচিত।তুলসীর আদি জন্ম ভারতবর্ষে।বাংলাদেশে যদিও তুলসীর গাছ বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয় না।তবে তুলসী গাছের চাষ ভারতে বাণিজ্যিকভাবে হয়।বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানিও ঔষধ এর কাঁচামাল হিসেবে তুলসী পাতা ব্যবহার করে থাকে।তুলসী গাছের চারা খুব সহজেই সংগ্রহ করা যায়।তুলসি গাছ দৈনিক ৩-৪ ঘন্টা আলো পেলেই বেড়ে উঠতে পারে।
তুলসী পাতার ঔষধি গুনাগুন কি জেনে নিন
তুলসী তুলসী গাছের কিছু প্রয়োজনীয় অংশ হল পাতা,বীজ,বাকল ও শিকড়।ঔষধি গুণগত দিক দিয়ে এই তুলসী বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে কাজ করে।তুলসী পাতা ঔষধ হিসেবে যে সব রোগ সারাতে সাহায্য করে তা হল-
- ফুসফুসের দুর্বলতা,কাশি,কুষ্ঠ,শ্বাসকষ্ট,সর্দি,জ্বর,চর্মরোগ,বক্ষবেদনা,হাঁপানি,হাম,বসন্ত,কৃমি,ঘামাচি,কিটের দংশ এছাড়াও রক্তে চিনির পরিমাণ হ্রাস করে।এছাড়াও মশার কামড় থেকে বাঁচতে ঘরে তুলসী রাখতে পারেন।এতে আপনাকে মশারি টানানো,এরোসল স্প্রে ও দোয়া যুক্ত করার জ্বালাতে প্রয়োজন হবে না।আসুন জেনে নেই তুলসী পাতার ঔষধি গুণ সম্পর্কে-
- চোখের সমস্যায়তুলসীর ঔষধি গুণ: চোখের সমস্যা দূর করতে কয়েকটি তুলসী পাতা পানির মধ্যে ভিজিয়ে রাখুন।ওই পানি দিয়ে সকাল বেলা চোখ ধুয়ে ফেলুন।
- মাথা ও শরীর ব্যথায়: মাথাব্যথা ও শরীর ব্যথা কমাতে তুলসী পাতা খেতে পারেন।মাথা ব্যথা ও শরীর ব্যথায় তুলসি পাতা খুবই উপকারী।
- শারীরিক ও মানসিক সমস্যায়: শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দূর করতে তুলসী চা খেতে পারেন।এটি মস্তিষ্কের অক্সিজেন সরবরাহ বাড়াতেও সাহায্য করে।
- মুখের রুচি বাড়াতে: সকালবেলা খালি পেটে কয়েকটি তুলসী পাতা চিবিয়ে খেয়ে ফেলুন।খালি পেটে তুলসী পাতা খেলে মুখের রুচি বাড়ে।
- ঠান্ডা কাশি দূর করে: ঠান্ডা কাশি থেকে রক্ষা পেতে তুলসী পাতার সাথে আদার রস ও একটুখানি মধু মিশিয়ে খেলে ঠান্ডা কাশি ভালো হয়।
তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন
- তুলসী পাতা খাওয়ার সবচেয়ে ভালো একটি উপায় হল চায়ের সাথে তুলসী পাতা খাওয়া।তুলসি চা খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে জীবাণুমুক্ত করে তুলে।তাছাড়া ও তুলসী চা ত্বকের ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে।তুলসী পাতা খেলে রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।একটা ভারবাল চা বানানোর জন্য ১/৫ কাপ তুলসী পাতা পানিতে ভালো করে ফুটিয়ে নেই।ফুটানো হয়ে গেলে আঁচ কমিয়ে এভাবে দশ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন।
- এর মধ্যে এক চামচ মধু ও ২চামচ লেবুর রস মিশিয়ে খেয়ে নিন।তুলসী খাওয়ার একটি অন্যতম সহজ উপায় জেনে নিন।এর জন্য প্রথমে আপনাকে তুলসী পাতা জলে ফুটিয়ে নিতে হবে।এরপর আপনার পছন্দ অনুযায়ী গুল্ম গুলি যুক্ত করতে পারেন।এইচআইএ সর্বোত্তম জিনিসটি হল একটি ক্যাফিন মুক্ত এবং লোহিত সরকরার পরিমাণ উচ্চমানের লোকদেরও উপকার করে।
- শুকিয়েও তুলসী ব্যবহার করতে পারেন।এর জন্য প্রথমে আপনাকে তুলসী পাতা ভালো করে শুকিয়ে সেগুলো সংরক্ষণ করতে হবে।শুকনো পাতাগুলি দিয়ে গুঁড়ো তৈরি করতে হবে।তুলসী গুড়োর সাথে ঘি মিশিয়ে রুটি বা চাপাতির সাথে মিশিয়ে চা তৈরি করে খেতে পারেন।২ চামচ ঘি এর সাথে ১/২ চামচ তুলসি গুঁড়ো মিশ্রিত করতে পারবেন।শুকনো তুলসী গুঁড়ো রুটির পাশাপাশি ডালের সঙ্গেও যোগ করতে পারবেন।
কাশির জন্য তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম জেনে নিন
শিশু থেকে শুরু করে যেকোনো বয়সের মানুষেরই সর্দি কাশি হতে পারে।সর্দি-কাশির এক মহা ঔষধ হল তুলসী পাতা।কাশি হলে যে কোন ঔষধ এর চেয়ে তুলসী পাতা বেশি কার্যকরী।এবার জেনে নিবো কাশির জন্য তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা প্রমাণ দিয়েছে।তবে কাশির জন্য তুলসী পাতা কেন এত উপকারী তা জানেন কি? শুকনো কাশি ও ঠান্ডা কাশির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।সব ধরনের কাশির ক্ষেত্রে তুলসী পাতা কাজ করে না।আপনি যে কোন কাশির জন্যই যদি দিনের যেকোনো সময় যে কোন ভাবে একটি তুলসী পাতা খেয়ে নিন, তাতে কিন্তু ঠিক ভাবে কাজ করবে না।
আরো পড়ুনঃ ধনিয়া বা ধনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
আপনাকে জানতে হবে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।কাশি নিরাময়ের জন্য তুলসী পাতা খাওয়ার একমাত্র অন্যতম কারণ হলো,কাশি হলে আমাদের শরীরে প্রদাহ অনেক বেশি থাকে।সেজন্য এ সময়ে সহজে খাবার হজম হয় না।তুলসী পাতা খেলে সহজেই খাবার হজম হয়ে যায়।খাবার হজম হওয়ার জন্য এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।তুলসী পাতা শুকনা ও গরম প্রকৃতির হয়ে থাকে।ফলে গলা ও ফুসফুসে আরাম দিতে পারে।তুলসী পাতা খেলে মুখের রুচি বাড়ে ও সহজেই খাবার হজম হতে সাহায্য করে।তুলসী পাতার রস কিভাবে খেতে হয়।
২/৩ টি তুলসী পাতা, ১/২ বা ২ টেবিল চামচ পরিমাণ মধু, আধা সিমটি হলুদের গুঁড়া,আধা চিমটি লং পেপার ও আদা চিমটি কালো গোলমরিচ ইত্যাদি সবকিছু ব্লেন্ড করে নিতে হবে।ব্লেন্ড করা উপাদানগুলো থেকে শুধু রস বের করে নিতে হবে।৫ মিলি করে দিনে ২-৩ বার এই উপাদানটি খেতে পারবেন।সব উপাদান গুলোই গরম প্রকৃতির। তাই দুই সপ্তাহর বেশি খাওয়া উচিত নয়।অনেকে সকালে উঠেই তুলসী পাতা কাঁচা চিবিয়ে খায়।তবে সেটি মোটেই উচিত নয়।তুলসী রস খাওয়ার ৫-১০ মিনিট পর হালকা গরম পানি খেয়ে নিবেন।
খালি পেটে তুলসী পাতা খেলে কি হয়
তুলসী পাতায় রয়েছে কমিউনিটিভ বৈশিষ্ট্য যা পেট ফাঁপা সমস্যা কমায়।সকালে খালি পেটে তুলসীর কানি খেলে শরীরের ক্ষতিকারক টক্সিন দূর হয়।তুলসীর রস খেলে হজম শক্তি বাড়ে ও পাচনতন্ত্র সুস্থ রাখে।আদি যুগ থেকেই প্রচলিত হয়ে আসছে তুলসী।বাড়িতে গজানো এই গাছের উপকারিতা যেন শেষ নেই।তুলসির গাছের পাতা থেকে ডাল ও বিভিন্ন অংশ কাজে লাগে। আয়ুর্বেদরা তুলসীকে মহা ঔষধ বলেছেন।নানা ধরনের অসুখের বিরুদ্ধে শরীর কে লড়াই করার ক্ষমতা জোগাড় করে দেয়।
তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি বিস্তারিত জেনে নিন
তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে হয়তো সবারই জানা আছে।কিন্তু তুলসী পাতা খেলে কোন কোন রোগের উপকারিতা হয় তা হয়তো সবারই অজানা।ঔষধি গুণ হিসেবে তুলসী পাতার ব্যবহার বেশ পুরোনো।তুলসী পাতায় রয়েছে এন্টি ইনফ্লামেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।তুলসী পাতা খেলে মারাত্মক ধরনের রোগের উপকার পাওয়া যায়।যেমন ক্যান্সার,ডায়রিয়া,হৃদরোগ ইত্যাদি।গুণগত দিক থেকে এটি নানা ধরনের ওষুধ হিসেবে কাজ করে।
এবার জেনে নিব তুলসী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে-
তুলসী পাতায় সর্দি কাশি কমিয়ে দেয়: এটি অনেক আগে থেকেই প্রচলিতযে, ঠান্ডা লাগলে বা সর্দি কাশি হলে তুলসী পাতা খাওয়া হয় ঔষধ হিসেবে।সর্দি ও কাশি সারাতে দ্রুত কাজ করে।বুকে জমাট বাঁধা কফ দূর করতে প্রতিদিন সকালে তুলসী পাতা,আদা ও চা পাতা ভালোভাবে ফুটিয়ে তাতে মধু ও লেবু মিশিয়ে খেতে পারেন।এতে আপনি অতি দ্রুত উপশম পাবেন।
- গলা ব্যথা দূর করে: গলা ব্যথা দূর করতে আস্থা রাখতে পারেন তুলসী পাতার উপর।কারণ গলা ব্যাথা সমস্যা দূর করতে তুলসী পাতার বিকল্প নেই।শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা দূর করতেও তুলসী পাতা বেশ উপকারী।তাই আপনি নিয়মিত তুলসী পাতা খাওয়ার অভ্যাস করুন।গলা ব্যথা দ্রুত সারাতে কয়েকটি তুলসী পাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে খেয়ে পানি দিয়ে গড়গড়া করুন।
- তুলসী পাতা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে: এক মরণব্যাধি রোগের নাম হল ক্যান্সার।এই অসুখের হাত থেকে দূরে রাখতেও উপকার করে তুলসী পাতা।তুলসী পাতায় রয়েছে ফাইটকেমিক্যাল।ফাইটোকেমিক্যালহল,রোসমারিনিক এসিড,আইরে টিনার,লিউটিউলিনএবং এপি জেনিন।তুলসী পাতায় থাকা এই উপাদানগুলো ক্যান্সার রোগের বিরুদ্ধে কাজ করতে খুব কার্যকরী।অগ্নাশয়ের টিউমার দেখা দিলে সেক্ষেত্রে ও তুলসী পাতা অনেক উপকারী।তুলসী পাতা ব্রেস্ট ক্যান্সারও দূরে রাখে।
- তুলসী পাতা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: তুলসী পাতা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।অ্যাজমা,ফুসফুসে সমস্যা দূর করতেও মোকাবেলা করে।জ্বর সারাতে তুলসী পাতা খুবই উপকারী।বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে তুলসী পাতার সাথে এলাচ পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি পান করলে খুব সহজেই বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।ক্ষতস্থান তাড়াতাড়ি শুকাতে তুলসী পাতা বেটে তা ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিন।এতে আপনার ক্ষতস্থান তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে।
- তুলসী পাতার শরীরের ওজন কমায়: তুলসী পাতা মানবদেহের কোলেস্টেরল ও সুগারের মাত্রা দুটিই রোধ করে।তাই অতি সহজেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।শরীরের ওজন কমাতে ২৫০ মিলিগ্রামের তুলসী দিয়ে তৈরি একটি ক্যাপসুল প্রতিদিন খেতে পারেন।
- ডায়াবেটিস দূর করে: ইন্সুলিন জাতীয় উপাদান। প্রতিদিন খাবার খাওয়ার আগে তুলসী পাতা খেলে আমাদের শরীরের সুগারের মাত্রা কমে।তুলসী পাতা এন্টি ডায়াবেটিক ঔষধ হিসেবে কাজ করে।ডায়াবেটিস কমাতে তুলসীতে থাকা স্যাপোনিন ও ফ্ল্যাবোনয়েড খুব কার্যকরী।
তুলসী পাতার অপকারিতা কি বিস্তারিত জেনে নিন
তুলসী পাতা খুবই উপকারী।কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি এড়িয়ে চলা ভালো।চলুন এবার জেনে নিব তুলসী পাতার উপকারিতা কি সে সম্পর্কে-
- গর্ভাবস্থা বা স্তন্য পান করার সময়:গর্ভাবস্থা বা স্তন্যপান করানোর সময় অল্প পরিমাণে তুলসী খেলে তা ক্ষতিকর নয়।তবে অতিরিক্ত তুলসী পাতা খেলে নানা ধরনের জটিলতায় দেখা দিতে পারে।তাই এই সময়গুলোতে তুলসী পাতা এড়িয়ে চলুন।অতিরিক্ত তুলসী পাতা হতে পারে নারীদের বন্ধ্যাত্বের কারণ।তাই পরিমাণ মতো তুলসী পাতা খান।
- অতিরিক্ত তুলসী পাতা রক্তপাতের সমস্যা হতে পারে: অতিরিক্ত তুলসী পাতা খেলে শরীরে রক্ত প্রবাহ বেড়ে যেতে পারে।শরীরের স্বাভাবিকভাবে র রক্ত জমাট হওয়ার পূর্বাবণতা নষ্ট হয়।এ কারণে দেখা দিতে পারে শরীরের অতিরিক্ত রক্তপাতের সমস্যা।যেকোনো সার্জারি ক্ষেত্রে,সার্জারি করার কমপক্ষে দুই সপ্তাহ আগে তুলসী পাতা খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে।
- অতিরিক্ত তুলসী পাতায় নিম্ন রক্তচাপ হতে পারে: তুলসী পাতায় থাকে অতিরিক্ত পরিমাণে পটাশিয়াম। তাই অতিরিক্ত তুলসী পাতা খেলে কমে যেতে পারে আপনার শরীরের রক্তচাপ।এসব বিষয়গুলোতে সতর্ক থাকলেই তুলসী পাতা খাওয়া নিরাপদ।এছাড়া অন্য যেসব বিষয়ে উপকারিতা রয়েছে সে হিসেবে আপনি তুলসী পাতা নিয়মিত খেতে পারেন।
শিশুদেরকে তুলসী পাতা খাওয়ানোর নিয়ম
ঋতু পরিবর্তনের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।শুধু শিশুরাও নয় মৃত্যু পরিবর্তনের সময় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন বড়রাও।তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খেতে পারেন তুলসী পাতা।ঋতু পরিবর্তনের কারণে শিশুদের হয়ে থাকে জ্বর,সর্দি কাশি,গলা ব্যথা ও ঠান্ডা জনিত সমস্যা।এইসব সমস্যা দারুন কাজ করে তুলসী পাতা।এছাড়াও মানুষের চাপ দুশ্চিন্তা,মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে,শ্বাসকষ্ট দূর করতে তুলসী পাতা কার্যকারিতা অনেক।তাই ঋতু পরিবর্তনের সময় শিশুকে খাওয়াতে পারেন তুলসী পাতা।তবে সেটি নিয়ম অনুসারে খাওয়াতে হবে।শিশুর কার্যকারিতা বাড়াতে তুলসী পাতা খাওয়ার কিছু নিয়েও তুলে ধরা হলো -
- তুলসী পাতার সঙ্গে একটুখানি আদা ব্লেন্ড করে নিন।এটি দৈনিক ২ থেকে ৩ বার শিশুকে খাওয়াতে হবে।
- তুলসী পাতা সঙ্গে মধু মিশিয়ে নিয়েও শিশুকে খাওয়াতে পারেন।
- একটি পাত্রে অল্প পরিমাণে গরম পানি পড়ে নিন।তার মধ্যে দিয়ে দিয়েন কিছু পরিমাণে তুলসী পাতা, আদা কুচি ও দারুচিনির গুড়া।এ বিশেষ প্রাণী অতি খাওয়াতে পারে আপনার শিশুকে।
- তুলসী পাতার সাথে গুড মিশিয়ে সরাসরি চিবিয়ে ও খাওয়াতে পারেন শিশুকে।নিয়মিত এই পাতা খাওয়ার অভ্যাস করাতে পারেন।এতে সুস্থ থাকার পাশাপাশি সর্দি কাশি, জ্বর, গলা ব্যথার, স্থায়ীভাবে সমাধান পাবেন।সুস্থ থাকার জন্য পরিবারের সকল সদস্যদের তুলসী পাতা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা ভালো।
তুলসী গাছের চাষ কিভাবে করতে হয়
তুলসী গাছের পরিচিতি সম্পর্কে জেনে নিন
এই চ্যাপ্টারের আগে আমরা জানতে পেরেছি তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।ভালো মানের তুলসী পাতা পেতে,নিজে তুলসী গাছ চাষ করাই ভালো।তুলসী পাতা আমাদের সকলেরই পরিচিত।তুলসী গাছ ২-৩ ফুট উঁচু হয়ে থাকে। তুলসী ছাড়া ৪ ধরনের হয়।
- গুল্ম স্থায়ী কাণ্ডবিশিষ্ট
- শাখা প্রশাখার উপরিভাগে পুষ্পদ্বন্ড
- পাতাগুলো খাঁজকাটা ও ২-৫সেমিস্টার লম্বা
- পুষ্পদ্বন্দ্বের চারদিকে ফুল থাকে
ঔষধি ভেষজ হিসেবে তুলসী পাতা ব্যাপক পরিচিত।জুলাই আগস্ট ও নভেম্বর ডিসেম্বর মাসে তুলসী গাছে মঞ্জুরি দেখা দেয়।হিন্দুদের ক্ষেত্রে রয়েছে এই তুলসী গাছের বিশেষ গুরুত্ব।
বাণিজ্যিকভাবে তুলসী গাছ চাষ করার নিয়ম
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চাষীরা তুলসী গাছ বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করে থাকে।তুলসী গাছের চাষ করে মাত্র তিন মাসে ১৫-২৫ হাজার টাকা খরচ করে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। তুলসীর বীজ ও পাতার রয়েছে বিশেষ চাহিদা।তুলসীর বীজ ১৫০-২৫০ টাকা আর তুলসির তেল ৯০০-১০০০ টাকা লিটারে বিক্রি হয়।লবঙ্গ তেলের তুলনায় তুলসীর তেলে রয়েছে 70% বেশি ইউনজেনল।তুলসী চাষ বাংলাদেশে কৃষকদের বাণিজ্যিকভাবে উদ্বুদ্ধ করা উচিত।কারণ বাংলাদেশের মাটি তুলসী চাষে খুবই উপযোগী।
শহুরে জীবনে তুলসী রোপন করার নিয়ম
নানাবিদ কারণে আমাদের প্রতিনিয়ত শহরে থাকতে হয়।ক্রমশেই যেন কমে যাচ্ছে চারিদিকের সবুজ। শহরের চারিদিকে শুধু গাড়ির হওয়ার আর মানুষের কোলাহল।শহরের মধ্যে গাছ লাগানোর নেই পর্যাপ্ত উঠোন।তবে তুলসী গাছ ক্ষুদ্র পরিসরেও লাগানো যায়।তুলসী গাছে আহা মরি যত্ন নিতে হয় না।অল্প পরিমাণে যত্ন নিলেও তুলসী গাছ বেড়ে উঠে।ঘর বায়ুকে পরিষ্কার রাখতে গাছের বিকল্প নেই।খুব অল্প কিছু মেনে চললেই বাসার মধ্যে তুলসী গাছ লাগানো সম্ভব।
চরা সংগ্রহ করা ও টপ বাছাই
সরাসরি বীজ থেকেও চারা উৎপাদন করা যায়।তবে যদি পাশে নার্সারি থাকে সেক্ষেত্রে নার্সারি থেকেই পুষ্টিকর চারা সংগ্রহ করাই ভালো হবে।টবের উচ্চতা ১০-১২ ইঞ্চি হওয়া দরকার। এতে চারা শিক্ষক ভালোভাবে বৃদ্ধি পায়।
তুলসী গাছ রোপনের জন্য মাটি তৈরি
তুলসী প্রায় সব মাটিতেই ভালো জন্মে।তবে তুলসী গাছ রোপনের জন্য সবচেয়ে লোনা মাটি ভালো।তবে তুলসী গাছ রোপনের জন্য মাটি তৈরির ক্ষেত্রে ১ ভাগ নদীর বেলে মাটি,১ ভাগ দু আস মাটি,১ ভাগ জৈব সার ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।এরপর প্রস্তুতকৃত মাটিগুলো তবে ভর্তি হবে।তবে মাটিগুলো প্রস্তুত করা হয়ে গেলে গাছটি রোপণ করতে হবে।টবে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।চারা রোপনের শেষে তুলসী গাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি দিতে হয়।
তুলসী গেছে পরিচর্যা সম্পর্কে খুঁজে নিন
তুলসী গাছে অতিরিক্ত আলোর প্রয়োজন হয় না।দৈনিক ৪-৫ ঘন্টা আলো পেলেই চলে।বাকি সময় ছায়াতে থাকলে কোন সমস্যা হয় না। তুলসী গাছ এমন জায়গায় রাখুন যেখানে মোটামুটি ভালো পড়ে।তুলসী গাছে অতিরিক্ত পরিমাণে পানি দেয়া লাগে না। মাটির আদ্রতা কমে গেলে পরিমাণ মতো পানি ঢালতে হয়।প্রতিমাসে কমপক্ষে একবার এক মুঠো সরিষার খৈল,আদা চা চামচ টিসপি,আদা চা চামচ ডিএপি এই উপকরণ গুলো ভালো করে টবের মাটিতে মিশিয়ে দিবেন।তুলসী দাস মোটামুটি ভাবে রোগবালায় মুক্ত গাছ।তবে মাঝেমধ্যে দেখতে হবে পোকা তুলসী গাছের ক্ষতি করেছে কিনা।তুলসী গাছকে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে যা করতে হবে
এক চা চামচ নিম অয়েল ও এক চা চামচ ডিটারজেন্ট এক লিটার পরিমাণ পানিতে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।এই মিশ্রণটি সপ্তাহের অন্তত তিনবার তুলসী গেছে স্প্রে করতে হবে।এই স্প্রের মাধ্যমে তুলসী গাছকে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করা যাবে।তুলসী গাছে ঝোপ বানাতে চাইলে মুকুল আসার সাথে সাথে কেটে দিবেন।এতে তুলসী গাছ সুগঠিত ও ঝোপওয়ালা হবে।
লেখকের শেষ মন্তব্য
GAZI MAX IT এর পক্ষ থেকে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে আপনি জানতে পেরেছেন তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি? সে সম্পর্কে।এই আর্টিকেলটির মধ্যে থেকে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো শিশুদের ক্ষেত্রেও তুলসী পাতা ঔষধ হিসেবে কাজ করে।সর্দি কাশির জন্য আপনি তুলসী পাতা খেতে পারবেন।তাছাড়াও তুলসী পাতা রয়েছে কিছু অপকারিতাও।সেগুলো অবশ্যই আপনাকে মেনে চলতে হবে।
তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি বিস্তারিত জেনে নিন?এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। রোজ খেজুর খেলে মুক্তি মিলবে যেসব রোগের এবং অতিরিক্ত খেজুর খাওয়ার অপকারিতা কি? যদি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার ভালো লেগে থাকে,তবে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধবী ও পরিচিতদের মাঝে নিচের 👇 যেকোনো শেয়ার অপশন থেকে,শেয়ার করে দিতে পারেন।আপনার মতামত কমেন্ট বক্সে 👇 জানিয়ে দিতে পারেন (ধন্যবাদ)।
Comments
Post a Comment