Skip to main content

গোলাপ চাষের যত্নে প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করবেন কিভাবে

গোলাপ চাষের যত্নে প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করার নিয়ম ও গাছে বা টবে ডিমের খোসা প্রয়োগ করার নিয়ম সম্পর্কে কি আপনি জানেন না? গোলাপ গাছে প্রাকৃতিক উপায়ে কিভাবে সার প্রয়োগ করবেন? তা নিয়ে কি আপনি চিন্তিত? তবে এতে চিন্তার কোনো কারণ নেই। আপনি আজকের এই আর্টিকেলটি থেকে জানতে পারবেন গোলাপ চাষের যত্নে প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করবেন কিভাবে? সে সম্পর্কে। এই আর্টিকেলটির লেখা অনুযায়ী কাজ করলে আপনি আপনার সমস্যার সমাধান পাবেন বলে আমি আশা করি।
গোলাপ চাষের যত্নে প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করবেন কিভাবে
আজকের এই আর্টিকেলটি থেকে আপনি জানতে পারবেন গোলাপ চাষের যত্নে প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করার নিয়ম সম্পর্কে? গাছে বা টবে ডিমের খোসা প্রয়োগ করার নিয়ম সম্পর্কে? গোলাপ গাছে প্রাকৃতিক উপায়ে একোয়ারিয়ামের পানি ব্যবহার করার নিয়ম? গোলাপ গাছে প্রাকৃতিক সার হিসেবে ডিমের খোসা কিভাবে ব্যবহার করবেন? গোলাপ চাষের যত্নে প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করবেন কিভাবে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে, আপনাকে এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ

.

গোলাপ চাষের যত্নে প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করবেন কিভাবে

গোলাপ চাষ কেউ শখের বিষয়ে করে আবার কেউ ব্যবসায়িক কাজ হিসেবে গোলাপ চাষ করেন। তো সকলের ক্ষেত্রেই অনেক অপেক্ষার পর গোলাপ ফুল ফোটে। সবার কাছেই গোলাপ ফুল পছন্দ। আর এই গোলাপ গাছ নিয়মিত যত্ন ছাড়া যেমন দ্রুত বাড়ে না, ফুলের আকৃতিও তেমন বড় হয় না। গোলাপ চাষ এমন জায়গায় করবেন, সেখানে প্রচুর রোদ পড়ে। আর টবে চাষ করলে, যেখানে ভালো রোদ পড়ে এমন জায়গায় টব রাখতে হবে। আপনি হয়তো জানেন না, আপনার হাতের কাছেই রয়েছে প্রকৃতিক সার। এগুলো আপনি গোলাপ গাছে দিতে পারেন প্রাকৃতির উপাদান হিসেবে। চলুন জেনে নেয়া যাক গোলাপ চাষের যত্নে প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করবেন কিভাবে-
গোলাপ চাষের যত্নে প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করবেন কিভাবে

প্রাকৃতিক সার হিসেবে কলার খোসার ব্যবহার কিভাবে করবেন

আপনার ইচ্ছা, আপনার গোলাপ গাছে বিভিন্ন রকমের গোলাপ ফুল ফুটবে। কিন্তু অনেক গোলাপ গাছ আছে, ফুল ফোটার পরে এক সপ্তাহর মধ্যে ফুল শুকিয়ে ঝরে যায়। প্রতিদিন নিয়মিত জল দিলেও কাজ হয় না। বাজার থেকে সার এনে দিলেও কোন উপকারেই যেন আসছে না। তবে হয়তো আপনি কারো কাছে শুনেছেন, কলার খোসা দিয়েই সার তৈরি করা যায়। হ্যাঁ এটা আপনি ঠিকই শুনেছেন। কিন্তু সার হিসেবে বলার খোসা গাছের গোড়ায় কিভাবে ব্যবহার করবেন তা হয়তো আপনার জানা নেই। জেনে নেয়া যায় প্রাকৃতিক সার হিসেবে কলার খোসার ব্যবহার কিভাবে করবেন সে সম্পর্কে-

  1. কলার খোসার পানির ব্যবহারঃ কলা খাওয়ার পরে একটি পাত্রে পানি দিয়ে সেই পানির মধ্যে কলার খোসাগুলো ভিজিয়ে রাখুন। ২-৩ দিন পরে সেই পানি গোলাপ গাছের গোড়ায় দিন।
  2. কম্পোস্ট সার তৈরিঃ বিভিন্ন ধরনের খোসা দিয়ে কম্পোস্ট সার তৈরি করতে পারবেন। যেমন- ডিমের খোসা, চা পাতা জমিয়ে জোকসার তৈরি করে এর সাথে কলার খোসা মিশিয়ে নিন। কলার মধ্যে থাকা মিথেন, গোলাপ গাছ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
  3. কলার খোসার গুড়া এর ব্যবহারঃ গোলাপ চাষের যত্নে প্রাকৃতিক সার ব্যবহার পড়া হিসেবে কলার খোসার গুড়া ব্যবহার করতে পারেন। কলার খোসার গুড়ো ব্যবহার করার জন্য প্রথমে রোদে কলার খোসা ভালো করে শুকিয়ে নিতে পারেন। তারপর এগুলো গুড়ো করে নিয়ে প্রয়োজন মত মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে পারেন।
  4. কলার খোসার উপরে গাছ রোপনঃ গাছ রোপণের আগে গর্ত খোড়ার পরে, গর্তের নিচে কিছু কলার খোসা রাখতে পারেন। এরপর অর্ধেক মাটি দিয়ে ওই কলার খোসাগুলো ঢেকে দিতে হবে। এরপর গাছ রোপন করুন। মাটির নিচে থাকা গলার সোলার মাধ্যমে প্রয়োজনমতো গাছে পুষ্টি পাবে।

প্রাকৃতির সার হিসেবে কফি ও ভিনেগার কিভাবে ব্যবহার করতে হয়

গোলাপ গাছের পটাশিয়াম, নাইট্রোজেন ও ম্যাগনেসিয়াম যোগাড় দেয় কফি ও ভিনেগার। জেনে নেয়া যাক প্রাকৃতির সার হিসেবে কফি ও ভিনেগার কিভাবে ব্যবহার করবেন? সে সম্পর্কে-

প্রাকৃতিক সার হিসেবে কফি ও ভিনেগার ব্যবহারের নিয়ম হলো- প্রথমে আপনাকে একটি স্প্রের বোতল নিতে হবে এবং স্প্রের বোতলের মধ্যে ভিগেনার ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর গোলাপ গাছের গোডায় স্প্রে ছিটিয়ে দিতে হবে। গোলাপ গাছের গোড়ায় স্প্রে ছিটানো হয়ে গেলে তার উপর কফির গুড়া ছিটিয়ে দিন। কফি ও ভিনেগারে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, নাইট্রোজেন থাকার পাশাপাশি সাদা ভিনেগারে রয়েছে এসিড।

গাছের প্রাকৃতিক সার হিসেবে চা পাতার ব্যবহার

গোলাপ চাষের যত্নে প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করা হিসেবে চা পাতার ব্যবহার করতে পারেন। চা বানানোর পরে চায়ের টি ব্যাগ বা চা পাতা সাধারণত আমরা ফেলে দেই। চায়ের পাতা দিয়ে রোগশার তৈরি করা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। চা আর মাটি দিয়ে তৈরি হয় জৈব সার। চা পাতা সরাসরি ও গাছের গোড়ায় দেয়া যায়। তবে জৈব সার তৈরি করার জন্য ব্যবহৃত চা সংগ্রহ করে ১৫ দিন রেখে দিন। ১৫ দিন পরে এইটা পচে জৈব সার তৈরি হবে। চা পাতার রয়েছে অনেক উপাদান।

চলুন জেনে নেয়া যাক গাছের প্রাকৃতিক সার হিসেবে চা পাতার ব্যবহার সম্পর্কে- চা পাতা গাছের গোড়ায় দেয়ার ফলে মাটির সুস্থতা রোধ করে এবং পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে। গাছের গোড়ায় সার প্রয়োগ করার নিয়ম হলো- সরাসরি চা পাতা দেয়া যাবে। তিন ভাগের দুই ভাগ মাটিতে এক ভাগ সার মেশাতে হবে। তবে চায়ের পাতা লিটারের শক্তি বেশি থাকে। তাই চারভাগের তিন ভাগ বেলে দোয়াশ মাটির সাথে একভাগ চা পাতা মেশানোই যথেষ্ট।

গোলাপ গাছে প্রাকৃতিক উপায়ে একোয়ারিয়ামের পানি ব্যবহার করার নিয়ম

বাসার একুরিয়াম কিছুদিন পর পরই পরিষ্কার করতে হয়। একুরিয়াম পরিষ্কার করার সময়, একুরিয়ামের ব্যবহৃত পানি খেলে না দিয়ে রেখে দিন। গোলাপ গাছের সার হিসেবে এই একুরিয়ামের পানি ব্যবহার করতে পারে। একুরিয়ামের পানি গোলাপ গাছ বৃদ্ধিতে অনেক সাহায্য করে।

গোলাপ গাছে প্রাকৃতিক সার হিসেবে ডিমের খোসা কিভাবে ব্যবহার করবেন

আমরা সবাই ডিমের খোশাকে অপ্রয়োজনীয় ময়লা আবর্জনা ভেবে ফেলে দেই। কিন্তু এই ডিমের খোসা দিয়েই প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি করা যায় সার। তার জন্য আপনাকে স্যার তৈরি করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হবে। ডিমের খোসায় গাছের ম্যাক্রো নিউট্রিয়েন্টস পূরণ করে। এছাড়াও পাওয়া যায় গাছের ক্যালসিয়াম ও কার্বনেট। ডিমের খোসায় রয়েছে আয়রন, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, ফ্লোরিন, ক্রোমিয়াম ইত্যাদি। এগুলোর অভাবে ফুল, কাণ্ড শিকড় বাড়তে পারে না । তার জন্য বিকৃতি, পাতার গায়ে কালো দাগ ও হলুদ রং দেখা যায়। চলুন জেনে নেই গোলাপ গাছে প্রাকৃতিক সার হিসেবে ডিমের খোসা কিভাবে ব্যবহার করবেন? সে সম্পর্কে-

ডিমের খোসা দিয়ে সার তৈরি করার জন্য প্রথমেই আপনাকে ডিমের খোসার সংগ্রহ করতে হবে। ডিমের খোসা গুলো ভালো করে শুকিয়ে নিতে হবে। ঠিকমতো শুকানো হয়ে গেলে তারপর ডিমের খোসা গুলো পাউডারের রূপান্তরিত করতে হবে। তার জন্য আপনি ব্লেন্ড করে নিতে পারেন বা পাটায় পিষে নিতে পারেন। খেয়াল করে দেখতে হবে যাতে দানা দানা হয়ে না থাকে। একদম মিহি করে নিতে হবে।

ভালোভাবে মিহি করে নিলে গাছের গোড়ায় ব্যবহারের পরে একদম সহজেই মাটির সঙ্গে মিশে যায়। আর যদি দানা দানা থেকে যায় সেক্ষেত্রে মাটির সঙ্গে মিশতে অনেক দিন লেগে যায় এবং পোকামাকড়ের দেখা দেয়। তাই এমনভাবে মিহি করতে হবে যাতে পিপড়া ও কোনো পোকামাকড় আক্রমণ করতে না পারে। ডিমের তৈরি কৃত প্রাকৃতিক সার যে কোন গাছের ব্যবহার করা যাবে। গোলাপ চাষের যত্নে প্রাকৃতিক সার ব্যবহার হিসেবে গাছে বা টবে ডিমের খোসা প্রয়োগ করার বিকল্প নেই।

গাছে বা টবে ডিমের খোসা প্রয়োগ করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন

গাছে বা টবে ডিমের খোসা প্রয়োগ করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন

টব

চামচ

৮ ইঞ্চি টব

এক টেবিল চামচ

১০ ইঞ্চি টব

এক টেবিল চামচ

১২ ইঞ্চি টব

১.৫ টেবিল চামচ

ডিমের খোসা সিদ্ধর পানি গাছ দ্রুত বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। সিদ্ধ করে নিতে হবে। এই পানি উষ্ণ আবহাওয়ায় ২৪ ঘন্টা রাখতে হবে এবং পরের দিন এই পানি গাছে স্প্রে করতে হবে। এতে অধিক পরিমাণে ফুল পাওয়া যায়। ডিমের খোসার সাথে সোহেল বা নিমের গুড়া মিশিয়ে প্রয়োগ করতে পারেন। এতে কীট পতঙ্গের আক্রমণ থেকে গাছকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

লেখক এর শেষ মন্তব্য

GAZI MAX IT এর পক্ষ থেকে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে আপনি জানতে পেরেছেন করার নিয়ম সম্পর্কে। এই আর্টিকেলটির মধ্যে থেকে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- গোলাপ চাষের জন্য আপনাকে সঠিকভাবে জমি নির্বাচন করতে হবে এবং সঠিকভাবে চারা রোপন করতে হবে। তাছাড়া নিয়ম অনুযায়ী সার প্রয়োগ করতে হবে। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন এবং আপনি আপনার প্রশ্নের উত্তর খুজে পেয়েছেন।

গোলাপ চাষের যত্নে প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করার নিয়ম সম্পর্কে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। গোলাপ চাষের যত্নে প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করবেন কিভাবে?এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে, তবে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধবী ও পরিচিতদের মাঝে নিচের 👇 যেকোনো শেয়ার অপশন থেকে শেয়ার করে দিতে পারেন। আজকের আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনার কোনো মতামত বা তথ্য থাকলে কমেন্ট বক্সে 👇 জানিয়ে দিবেন (ধন্যবাদ)।

Comments

Popular posts from this blog

সুন্দরবন হোটেল বা রিসোর্ট বুকিং করার নিয়ম সম্পর্কে জানুন -২০২৪

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের অনলাইনে টিকিট কাটা - ভ্রমণ করার সকল নিয়ম

মুক্তা চাষ কিভাবে করবেন এবং মুক্তা চাষের জন্য কোথা থেকে প্রশিক্ষণ নিবেন