Skip to main content

কতক্ষণ ধরে চুলে তেল মালিশ করলে বন্ধ হবে হেয়ার ফল

কতক্ষণ ধরে চুলে তেল মালিশ করলে বন্ধ হবে হেয়ার ফল? এই প্রশ্নের উত্তর কি আপনিও খুঁজছেন? চুলে তেল দেওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে আপনি কি জানতে ইচ্ছুক? তাহলে আপনি এই আর্টিকেলটি থেকেই জানতে পারবেন চুলে তেল ব্যবহার করার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে। আশা করি এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।

কতক্ষণ ধরে চুলে তেল মালিশ করলে বন্ধ হবে হেয়ার ফল
এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনি আরও জানতে পারবেন চুলে তেল ব্যবহার করার আগে কি করতে হবে? ও চুলে তেল দেওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে। কতক্ষণ ধরে চুলে তেল মালিশ করলে বন্ধ হবে হেয়ার ফল এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটির সাথেই থাকুন।

প্রতিদিন চুলে তেল দিলে কি হয়

মাথা ভর্তি চুল ঝলমলে হওয়ার জন্য নিয়মিত তেল লাগিয়ে মাথা মাসাজ করুন। চুলে ও স্ক্যাল্পে নিয়মিত তেল লাগালে এবং মাসাজ করলে এর রয়েছে অনেক উপকারিতা। অয়েল মাসাজ করলে মাথার রক্ত চলাচল সংবহন থাকে। ডিপ কন্ডিশনিং হয়, শরীর ও মন কে রাখে শীতলতা, মাথার চাপ থেকে মুক্তি দেয় এবং শরীরের ক্লান্তি দূর করে। আসুন জেনে নেই প্রতিদিন চুলে তেল দিলে কি হয় সে সম্পর্কে-
  • চুল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে: আমাদের চুল মূলত প্রোটিনের তৈরি। তাই চুল সঠিক নিয়মে বৃদ্ধি করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টির দরকার। আর এই পুষ্টি যোগাতে পারে তেল। তেল ব্যবহারে চুলের গোড়া হয় মজবুত এবং চুল বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
  • তেলে চুল মজবুত করে: চুল দুর্বল হওয়ার কারণেই ঝড়ে যায়, চুলের অতিরিক্ত শুষ্কতা ও তেলতেলে ভাব হয়, চুলের আগা ফেটে যায় এবং চুল ভেঙ্গে যায়। চুলের গোড়া দুর্বল হওয়ার কারণে দৈনিক ১০০ থেকে ১৫০ টা চুল ঝরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই অয়েল মাসাজের মাধ্যমে চুলের গোড়ায় সহজে পুষ্টি জোগাতে পারে।
  • শরীর ও মনের শান্তি যোগায়: তেল দিয়ে স্ক্যাল্পে মাসাজ করার মাধ্যমে মাথার রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় এবং মাথার স্নায়ু গুলো শিথিল হয়ে যায়। মাথা মাসাজ করার মাধ্যমে শরীর ও মন হালকা হয় এবং মানসিক চাপ কমিয়ে দেয়। নিয়মিত তেল মেসেজ করলে চুলের বৃদ্ধি পায়।
  • অকালপক্কতা দূর করে: আজকাল অল্প বয়সী ও পরিণত বয়স্ক মানুষ, দুই ধরনের মানুষের ক্ষেত্রে এই চুল পেকে যাওয়ার সমস্যাটা দেখা যায় আর অল্প বয়সীদের চুল পেকে যাওয়ার কারণ হলো ভিটামিন ও প্রোটিনের অভাব। তেল ব্যবহারের কারণে চুলের স্বাভাবিক কালো রং ধরে রাখে। এছাড়াও চুলের একটি সুরক্ষা আবরণ তৈরি করে। চুলে তেল ব্যবহারে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্নির হাত থেকে রক্ষা করে। যার ফলে চুল সাদা হয়ে যায় না।
  • খুশকি প্রতিরোধ: চুলের প্রাণ ফিরে পেতে অবশ্যই তেল ব্যবহার করতে হবে। তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে জানতে হবে কতক্ষণ ধরে চুলে তেল মালিশ করলে বন্ধ হবে হেয়ার ফল। চুল উঠে যাওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো মাথায় খুশকি থাকা। আর এই খুশকি দূর করার জন্য নিয়মিত তেল ব্যবহার করুন এবং মাথা মাসাজ করুন। নিয়মিত তেল ব্যবহার না করার কারণে মাথার ত্বক অনেক পরিমানে শুষ্ক হয়ে যায় এবং এর জন্যই খুশকি হয়।
  • সংক্রমণ প্রতিরোধ: মাথার রুম ছিদ্রগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে চুলকানি হয় এবং তা থেকে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক সংক্রমণের দেখা দেয়। আর এইসব সংক্রমণ এর কারণেই মাথায় খুশকি হয়, উকুনের আক্রমণ হয়। যার ফলে চুল উঠে যায়। তাই এই সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে নিয়মিত তেল ব্যবহার করুন এবং মাথা মাসাজ করুন।
  • চুলের ঝলমলে ভাব ফিরিয়ে আনুন: স্বাস্থ্যবান চুল চেনার অন্যতম একটি উপায় হলো ঝলমলে ভাব থাকা। অতিরিক্ত উত্তপে চুল ভেঙ্গে যায় এবং চুলের আগা ফেটে যায়। আর এই সমস্যাগুলো দূর করতে নিয়মিত তেল ব্যবহার করতে পারেন। তেল ব্যবহারের ফলে তুলে আসবে ঝলমলে ভাব ও চুলকে সুন্দর করে ফেলবে।
  • চুলকে সুরক্ষিত রাখা: চুলকে সুরক্ষিত রাখতে নিয়মিত তেল ব্যবহার করুন। চুলে নিয়মিত তেল লাগানোর ফলে চুল জল শোষণ করা বন্ধ করে। যার ফলে পানির কণা চুলের ভিতর ঢুকে কোন ক্ষতি করতে পারে না।

চুলে তেল ব্যবহার করার আগে কি করতে হবে

অনেক আগে থেকেই শ্যাম্পু করার আগে মাথায় তেল লাগানোর নিয়মটা প্রচলিত। আপনার চুল যদি অনেক রুক্ষ ও খসখসে ভাব হয়। তাহলে আপনাকে ওভারনার ট্রিটমেন্ট নিতে হবে। চুলের রুক্ষ ভাব দূর করতে এমন একটি তেল বেছে নিতে হবে, যা চুলের গভীর থেকে পুষ্টি জোগাড় দেয়। হাতে তেল নিয়ে তা চুলে ঘষে ঘষে মেখে নিতে হবে। চুলের ধরন অনুযায়ী এসেনশিয়াল ও ক্যারিয়ার মিশিয়ে নিয়ে তারপর মাথায় ও চুলে দিতে হবে। এই তেল ব্যবহারের পরে ঘুমোতে যাওয়ার সময় শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে চুল ভালোভাবে আটকে নিতে হবে। এতে বিছানায় বা বালিশে তেলের দাগ লাগবে না। এছাড়াও আপনি তোয়ালে দিয়ে বালিশ ডেকে দিতে পারেন। পরের দিন সকালবেলা শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে চুল ধুয়ে নিবেন।

কতক্ষণ ধরে চুলে তেল মালিশ করলে বন্ধ হবে হেয়ার ফল

অনেক বেশি উপকার পেতে ঠান্ডা তেলের চেয়ে হালকা গরম করে তেল নিলে ভালো হয়। তবে খেয়াল রাখতে হবে তেল যেন অতিরিক্ত গরম না হয়। অতিরিক্ত গরম হলে আপনার ত্বক পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। তেল এমনভাবে গরম করতে হবে যা আপনি তেলের মধ্যে হাত দিলে হালকা গরম লাগে কিন্তু আপনার স্কাল্পে ছ্যাকা না লাগে। তাছাড়া হবে তেল বেশি গরম করলে পুষ্টিগত গুণ নষ্ট হয়ে যায়। জেনে নেয়া যাক কতক্ষণ ধরে চুলে তেল মালিশ করলে বন্ধ হবে হেয়ার ফল--

কতক্ষণ ধরে চুলে তেল মালিশ করলে বন্ধ হবে হেয়ার ফল
  • তেল ব্যবহারের আগে অবশ্যই পানি দিয়ে মাথা এবং চুল ভালো করে ভিজিয়ে নিতে হবে। অথবা আপনি ভালো করে শ্যাম্পু দিয়েও নিতে পারেন।
  • চুল ভাগ ভাগ করে নিয়ে স্কাল্পে ও চুলে সব জায়গা ভালো করে তেল লাগাতে হবে এবং ভালোভাবে মাথা মাসাজ করতে হবে। তারপর কোমল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • চুল ধোয়ার পরে যদি তেল ব্যবহার করেন। তাহলে চুলের গোড়ার দিকে লাগাবেন না। এতে চুল ন্যাতানো দেখাতে পারে।
  • যদি আপনার হাতে বেশি সময় না থাকে, তাহলে কন্ডিশনারের সাথে কয়েক ফোটা তেল মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে দিতে পারেন।
  • একটি বড় বোলে পানি নিন এবং এর মধ্যে এক টেবিল চামচ হেয়ার অয়েল মেশান। ভালো করে মেশানো হয়ে গেলে সেই পানির মধ্যে আপনার চুলগুলো ২০ থেকে ২৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এরপর একটি তাওয়াল দিয়ে আপনার চুলগুলো জড়িয়ে রাখুন। এভাবে এক ঘন্টা রেখে দিলে অনেক উপকার পাবেন। তারপর ভালো শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • একটি স্প্রের বোতল নিন এবং তার মধ্যে পানি ও কয়েক ফোঁটা হেয়ার অয়েল ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার সমস্ত চুলে স্প্রে করুন। এতে আপনার চুল অনেক বেশি পুষ্টি পাবে এবং হেড প্রটেক্ট এর ক্ষতি গুলো থেকে চুলকে রক্ষা করবে।

অয়েল মাসাজ করতে কোন তেল ব্যবহার করতে হবে

আমাদের চুল ও মনের সুস্থতা রাখতে ওয়েল ম্যাসাজ খুবই জরুরী। তবে আমাদের জানতে হবে কোন তেল দিয়ে অয়েল মাসাজ করা ভালো। সঠিক তেলের সঠিক নিয়মে ব্যবহার করতে পারলে আপনার চুলও থাকবে সুস্থ এবং ঝলমলে। এতক্ষণে আমরা জানতে পেরেছি কতক্ষণ ধরে চুলে তেল মালিশ করলে বন্ধ হবে হেয়ার ফল? সে সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো অয়েল মাসাজ করতে কোন তেল ব্যবহার করতে হবে—
  • নারকেল তেল: নারিকেল তেল ব্যবহার করার ফলে ব্যাকটেরিয়া ছত্রাক প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও নারিকেল তেল মশ্চারাইজার হিসেবে অনেক ভালো কাজ করে। নারিকেল তেল চুলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখে।
  • আমন্ড অয়েল: এই তেলে রয়েছে অনেক পরিমান ভিটামিন ই। যা আপনার চুলে পুষ্টি যোগাবে, চুলের আদ্রতা ধরে রাখবে এবং চুলকে করবে মজবুত।
  • অলিভ অয়েল তেল: এই তেলের রয়েছে অনেক পরিমানে এসেন্সিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিড। যা আপনার স্ক্যাল্পকে পূর্ণ জীবিত করবে। এছাড়াও এই তেল চুলের পুষ্টি যোগায় এবং চুল বৃদ্ধি করতে অনেক সাহায্য করে।
  • তিলের তেল: অনেক আয়ুর্বেদিক ঔষধ হিসেবে ও তিলের তেল ব্যবহার করা হয়। এই তেল ব্যবহারে চুল বৃদ্ধি হয় এবং স্ক্যাল্পের সংক্রমণ দূর হয়। চুল কন্ডিশনিং করে এবং স্কাল্পে পুষ্টি যোগায়।

চুলে তেল দেওয়ার সঠিক নিয়ম

  • তেল লাগানোর সময় সমস্ত তেল একদম মাথায় মেখে ফেলবেন না। তেল দেওয়ার সময় তেলের মধ্যে আঙ্গুল ভিজিয়ে চুল ফাঁকা ফাঁকা করে ধীরে ধীরে স্কাল্পে ও চুলে লাগাতে হবে।
  • আপনি যদি সঠিক নিয়মের তেল মাসাজ না করেন, তাহলে আপনার চুল উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। তেল দেওয়ার সময় যদি আপনি আঙ্গুলে তেল নিয়ে স্কাল্পে ঘষেন, তাহলে চুল উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই মাথায় তেল লাগানোর সময় আঙ্গুলের ডগায় তেল নিয়ে স্কাল্পে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ধীরে ধীরে মাসাজ করুন। তাতে আপনার রক্ত চলাচল সংবহন হবে।
  • চুলে তেল দেওয়ার সঠিক নিয়ম
    তেল ব্যবহার করার সময় কখনো নখ ব্যবহার করবেন না। মাথায় তেল ব্যবহার করার সময় তুলো দিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার হাতের চেয়ে কোমল ভাবে কাজ করবে।
  • প্রয়োজনের চেয়ে কখনো অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করবেন না। এতে চুলের কোন বাড়তি উপকারে আসে না। যদি আপনি বেশি তেল ব্যবহার করেন, তাহলে দোয়ার ক্ষেত্রেও বেশি শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। একদম চুল টুকটুকে করে ফেলার মতো তেল দিবেন না।
  • চুলে তেল লাগানোর আগে অবশ্যই চুল আচড়ে জট ছাড়িয়ে নিতে হবে। নয়তো ওয়েল মাসাজ করার সময় চুল আরো জট পেকে যাবে। যার ফলে চুল ছিঁড়ে যাওয়া ও ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • অয়েল মাসাজ করার পরে চুল অনেক নরম থাকে। তাই চুল মুড়িয়ে বাঁধবেন না। কারণ চুল শক্ত করে বাধলে, চুল উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

লেখক এর শেষ মন্তব্য

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চুলের সমস্যায় অনেকেরই পড়তে হয়। তখন আমরা বুঝতে পারি না কি করতে হবে। কতক্ষণ ধরে চুলে তেল মালিশ করলে বন্ধ হবে হেয়ার ফল? এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি জানতে পেরেছেন চুল পড়া রক্ষা করার সকল বিষয় সম্পর্কে।আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি থেকে নতুন কিছু জানতে পেরে আপনার ভালো লেগেছে।

এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে হয়তো আপনি আপনার অজানা তথ্যগুলো খুঁজে পেয়েছেন। এ আর্টিকেলে যদি কোন ভুল থাকে তাহলে ক্ষমার নজরে দেখবেন। কতক্ষণ ধরে চুলে তেল মালিশ করলে বন্ধ হবে হেয়ার ফল? এই আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনার কোনো মতামত বা তথ্য থাকলে কমেন্ট বক্সে 👇 জানিয়ে দিবেন।

Comments

Popular posts from this blog

সুন্দরবন হোটেল বা রিসোর্ট বুকিং করার নিয়ম সম্পর্কে জানুন -২০২৪

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের অনলাইনে টিকিট কাটা - ভ্রমণ করার সকল নিয়ম

মুক্তা চাষ কিভাবে করবেন এবং মুক্তা চাষের জন্য কোথা থেকে প্রশিক্ষণ নিবেন