আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে যদি আপনার কোন ধারণা না থাকে, তাহলে আপনি আর্টিকেলটি থেকে জেনে নিন। অনেকেই আছে আদা খায় কিন্তু আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানে না। তাই আজকে আমি এই আর্টিকেলটিতে আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং আদা জল কিভাবে বানাতে হয় সে সম্পর্কে আলোচনা করবো।
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের এই আর্টিকেলটির সাথে থাকেন, তাহলে একদিনে কতটুকু আদা খাওয়া যাবে? আধার পার্শ্ব ক্রিয়া বা অসুবিধা কি? আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি? সে সম্পর্কে আপনি ধারণা পেয়ে যাবেন। তাই মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ
.
আধা সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নিন
আদা হলো এক ধরনের ভেষজ। আদা কে সারা বিশ্বে তরকারির এক ধরনের মসলা হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। আদা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। আদাতে যে রোগের উপশম পাওয়া যায় তা হলো - এন্টি - ফাঙ্গাল, এন্টি ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টি - সেপটিক, এন্টিবায়োটিক, antivirus ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে অনেক পরিমানে খনিজ। এগুলো ছাড়াও আদায় রয়েছে ভিটামিন এবং খনিজ। অনেক বছর আগে থেকেই আদা একটি নিরাময়কারী প্রতিনিধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আদা শব্দটি সংস্কৃত শব্দ থেকে এসেছে সিঙ্গভরম থেকে। যা বিশ্লেষণ করলে কথাটি দাঁড়ায় শিং মূল।
আদার মৌলিক তথ্যগুলো কি
আদা নামটি জনপ্রিয় মূল নামে। ১৪ ই শতাব্দীতে আধা এবং একটি ভেড়ার মান সমান ছিল। আজও পর্যন্ত আধা কে মূল্যবান পণ্য হিসেবে ধরা হয়। আর এই আদার রয়েছে অনেক ঔষধি গুন। চলুন জেনে নেয়া যাক আদার মৌলিক তথ্যগুলো সম্পর্কে -
- আদার বোটানিক্যাল নাম - জিঙ্গিবার অফিসিনালি
- পরিবার - জিঙ্গিবেরাসি
- আদার প্রচলিত নাম - আদা, আসল আদা, আদ্রাক
- আদার সংস্কৃত নাম- আদ্রাক
- আদার ব্যবহৃত অংশ - কান্ড
- স্থানীয় অঞ্চল- আদা মূলত এশিয়ার গ্রীষ্ম পুরান অঞ্চল গুলিতে রয়েছে। এছাড়াও ভারত আফ্রিকা এবং আমেরিকাতে আদা অনেক বেশি চাষ করা হয়।
- আদার কর্মশক্তি- উষ্ণায়ন
একদিনে কতটুকু আদা খাওয়া যাবে
শরীরের সব রোগের ক্ষেত্রেই আদা যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। আমরা অনেকেই আছি কিছু না জেনেই অনেক বেশি পরিমাণে আদা খেয়ে থাকি। অতিরিক্ত যে কোন জিনিস খাওয়াই ঠিক না। একজন ব্যক্তি একদিনে এক থেকে তিন গ্রাম আদার পাউডার ব্যবহার করতে পারবে। তবে এটি কোন ব্যক্তির শরীরের ধরণ হিসেবে ব্যবহার করতে হয় এবং তার শরীরের লক্ষণ অনুযায়ী ব্যবহার করতে হয়। তাই আদা খাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপর খেতে পারেন।
আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
আদা ঔষধি হিসেবেও বেশ পরিচিত। আধা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। আদায় রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন ই এবং বি কমপ্লিট। এছাড়াও আদায় রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, সিলিকন, সোডিয়াম, আয়রন এবং আবার রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ সমৃদ্ধ। যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। চলুন জেনে নেই আদা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে -
- মলমুদ্রার চিকিৎসায় আদা খাওয়া: যে কোন ধরনের মলমূত্রর সমস্যা হলে, এক্ষেত্রে আদাকে ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। আদা খেলে পেটের গ্যাস হ্রাস করে এবং পেটের ফোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে।
- পেট খারাপের মুক্তি দেয়: পেটের সমস্যা দূর করতে আদা খেতে পারেন। আদায় থাকা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্ট আপনার পেটের পেশী শিথিল রাখবে এবং পেটের সমস্যা দূর করবে।
- বাতের সমস্যা: যাদের অনেক পরিমাণে বাতের সমস্যা রয়েছে, তারা নিয়মিত আদা খেতে পারেন। কারণ আদায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। যা আপনার হাড়কে মজবুত করবে এবং আপনার বার্জনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধ করে: আমরা সকলেই জানি ক্যান্সার খুবই একটি বিপজ্জনক রোগের নাম। আর এই ক্যান্সার নামক আক্রমনটি দূর করতে আদা খুবই উপকারী। আদা খাওয়ার ফলে শরীরে থাকা ক্যান্সার নামক কোষের মৃত্যু ঘটে। যার ফলে ক্যান্সার এড়ানো সম্ভব হয়।
- পিরিয়ডের ব্যথা দূর করে: মেয়েদের পিরিয়ড চলাকালীন সময় আধা চা খাওয়া উচিত। কারণ আধা চায়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট। যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- কাশি কমায়: আদায় রয়েছে বেদনা নাশক ব্যথা রিলাইবার। যা গলার সমস্যা দূর করে। কাশি কমাতে সাহায্য করে।
- মাইগ্রেনের সমস্যা দূর করে: কিছু বিশেষজ্ঞের মতে মাইগ্রেনের ব্যাথা দূর করতে আদা চা খাওয়া খুবই উপকারী। কারণ আদা চাই রয়েছে ভিটামিন এবং পুষ্টি। যা মাইগ্রেনের ব্যথা দূর করে।
আধার পার্শ্ব ক্রিয়া বা অসুবিধা কি
- যাদের শরীরে এলার্জির সমস্যা রয়েছে, তারা আদা খেলে জিহ্বা ফুলে যাওয়া এবং শরীরে চুলকানি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এলার্জি সমস্যা থাকলে আদা খাওয়া এড়িয়ে চলুন। ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
- আদা চা কখনো ৪-৫ কাপের বেশি সেবন করবেন না। এতে মাইগ্রেন জনিত সমস্যার রোগীদের অনিদ্রা ভাব হতে পারে।
- যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারা অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পড়াশোনা নিয়ে তারপর আদা খাবেন।
- বেশি আদা খেলে পেটে সমস্যা হতে পারে। সুতরাং যেকোনো কিছু পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবেন।
আদার ব্যবহার কিভাবে করতে হয়
এতক্ষণে আমরা জানতে পেরেছি আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো আদার ব্যবহার কিভাবে করতে হয়? সে সম্পর্কে।আদা এশীয় প্রণালীতে বেশি ব্যবহার করা হয়। আদা মূলত মসলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কোন খাবারের সুস্বাদু প্রতিনিধি হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। ত্বকের প্রদাহ এবং সংক্রমণ দূর করতেও আদার তেল ব্যবহার করা হয়। আধার পাউডার অন্যতম একটি উপকরণ হলো গরম মসলা। আদা ব্যবহার করা হয় রান্নার এবং কোন পানীয় বানানোর ক্ষেত্রে মসলাদার স্বাদ তৈরি করতে আধা ব্যবহার করা হয়। আর বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসার ক্ষেত্রে আদার ক্যাপসুল ব্যবহার করে থাকেন চিকিৎসাতে।
আদা জল কিভাবে বানাতে হয়
আদা জল সবচেয়ে ব্যাপকভাবে হজম শক্তি জোগাড় দানে সাহায্য করে। তাছাড়া আপনি যদি ওজন কমাতে চান, তাহলে লেবু, মধু এবং আদা দিয়ে চা তৈরি করে খেতে পারেন। এতে শরীরের ওজন কমে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, আধা এবং গ্রিন টিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্রিয়া-কলাপ।জেনে নেয়া যাক আদা জল কিভাবে বানাতে হয় সে সম্পর্কে -
- একটি পাত্রে ২ কাপ পানি ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে
- ফুটানো হয়ে গেলে সেই পানির মধ্যে এক টুকরা আদা দিতে হবে
- এভাবে পাঁচ ছয় মিনিট রেখে দিতে হবে সিম আচে
- এবার চুল থেকে পাত্রটি নামিয়ে নিয়ে ছেঁকে নিতে হবে
- পানি হালকা গরম থাকতে খেয়ে নিন
এই আঁধার জলের মধ্যে আপনি মধু এবং লেবুও মিশিয়ে নিতে পারবেন। এতে পানিটাকে আরো সুস্বাদু করে তুলবে। এছাড়াও এন্টিবায়োটিক এবং এন্টি অক্সিডেন্ট এর শক্তিকে অনেক বেশি বাড়িয়ে তুলবে।
আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা | আর্টিকেলটির শেষ কথা
বিভিন্ন রোগের প্রয়োজনে আমরা আদা খেয়ে থাকি। তাই আদা সম্পর্কে আমাদের সকলেরই ধারণা থাকা দরকার। আজকের এই আর্টিকেলটি থেকে আপনি জানতে পেরেছেন আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি থেকে নতুন কিছু জানতে পেরে আপনার ভালো লেগেছে।
এতক্ষণ আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে হয়তো আপনি আপনার অজানা তথ্যগুলো খুঁজে পেয়েছেন। এ আর্টিকেলটিতে যদি কোন ভুল থাকে তাহলে ক্ষমার নজরে দেখবেন। আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এই আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনার কোনো মতামত বা তথ্য থাকলে কমেন্ট বক্সে 👇 জানিয়ে দিবেন।
Comments
Post a Comment